বিপিএলে ফিক্সিং নিয়ে ডার্ক ন্যানেসের বোমা!
বাংলাদেশের ক্রিকেটের কলঙ্কিত এক অধ্যায়ের নাম বিপিএলে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারি। ২০১২ সালে শুরু হয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। দুই বছর যেতে না যেতেই টুর্নামেন্টটির ওপর ভর করে ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া। মোহাম্মদ আশরাফুল, লু ভিনসেন্টসহ আরো কয়েকজন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায় সর্বনাশা এই ফাঁদে পড়ে। একটা সময় তো বন্ধই হয়ে যায় বিপিএল। এক বছর পর আসর শুরু হলেও ফিক্সিং-কাণ্ড শেষ হয়নি। চতুর্থ আসরে নিষিদ্ধ হন সাবেক ক্রিকেটার সানোয়ার হোসেন ও উদীয়মান জুপিটার ঘোষ।
২০১৩ সালে বিপিএলে খেলেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা ক্রিকেটার ডার্ক ন্যানেস। সিলেট রয়েলসের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। সম্প্রতি দেশটির এক সংবাদমাধ্যমে বিপিএলের ফিক্সিং কেলেঙ্কারিকে আবার সবার সামনে নিয়ে এলেন তিনি। ফ্যাঞ্চাইজিগুলোর মালিকই ফিক্সিংয়ের সঙ্গে সরাসরিভাবে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ন্যানেস বলেন, ‘ফ্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে মালিক মাঠে আসতে পারেন না। তবে বিপিএলে সরাসরিভাবে মালিকরা সেখানে ঢুকতে পারতেন। ম্যানেজারের কাছে জিজ্ঞেস করতেন আমরা এরপর কী করতে যাচ্ছি। কোচের সঙ্গেও সম্পর্ক রাখতেন তাঁরা। এরপর ফ্রাঞ্চাইজির মালিক ফোনে অন্য কারো সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতেন। তাঁরা কোচের সঙ্গেও যোগাযোগ করতেন, এই কারণেই নাকি তাঁরা দল কিনেছেন।’
ফিক্সিং প্রক্রিয়াটাও বিশদভাদে বর্ণনা করেছেন এই ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ‘ফিক্সাররা মাঠের আশপাশেই থাকত। তাদের শার্টের কলারের সঙ্গে মাইক্রোফোন লাগানো থাকে, দশটার মতো মোবাইল থাকত তাদের সঙ্গে। কিছু ঘটলেই তারা মাইক্রোফোনে কথা বলে নিত। জানিয়ে দিত কখন কী ঘটছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে মানুষজন সবই দেখত তবে তাদের বের করে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করত না তারা।’
ফিক্সিং কাণ্ড প্রতিহত করতে ক্রিকেটারদের খুব বেশি করার নেই বলেও মনে করেন ন্যানেস। তিনি বলেন, ‘এমন কিছু ঘটনা ঘটত যেখানে ক্রিকেটার হিসেবে আপনার বলার মতো কিছু থাকত না। যেমন ধরুন, একজন বোলার দুই ওভারে মাত্র চার রান দিল অথচ তাকে পূর্ণ চার ওভার করালেন না আপনি।’
আইপিএলেও ম্যাচ ফিক্সিং হয় বলে জানিয়েছেন ডার্ক ন্যানেস। তিনি নিজেও এমন প্রস্তাব পেয়েছেন বলে জানান। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে ন্যানেস বলেন, ‘একবার আমার কাছে এক বুকি এলো। সে আমাকে বলল, প্রথম ওভারে ১২-১৩ রানের কম দিলে সে ৫০ হাজার ডলার দেবে। সেই ম্যাচে (২০১৩ সাল, কলকাতা নাইট রাইডার্স ও চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচ) প্রথম বলটাই ছিল ওয়াইড। বলটা উইকেটরক্ষক ধোনি ধরতে পারেনি। প্রথম বলেই হয় পাঁচ রান। পরের বলটা ছিল নো বল। ক্যারিয়ারে একটি বা দুটির বেশি নো বল করিনি আমি। এরপরের বলে আসে আরো চার রান। সেই ওভারে আসে ১৮ রান। সেই বুকি বাজি হেরে যায়। এটার মাধ্যমে তাকে আমি এই বার্তা দিয়েছিলাম যে, বোকার মতো বাজি ধরো না। সেবার তাঁর ৫০ হাজার ডলার লোকসান হয়।’