আপনার জিজ্ঞাসা
কেয়ামত কি আশুরার দিনে হবে?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মো. মনজুর ইলাহী।
বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫১৪তম পর্বে আশুরার দিন কেয়ামত হবে কি না, সে সম্পর্কে রাজধানীর দারুস সালাম থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন মনির হোসেন। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : আমাদের দেশে অনেকেই বলে, বিশেষ করে হানাফি মাজহাবের লোকেরা বলে যে ১০ মহররম নাকি কেয়ামত হবে? এ বিষয়ে কোরআন ও হাদিসে কী বলা আছে?
উত্তর : প্রথম কথা হচ্ছে, ইসলামে আশুরার তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটিকে নিয়ে যত ঘটনা বা কথা উল্লেখ করা হয়, তার মধ্যে সত্যি হচ্ছে একটা ঘটনাই, সেটা হচ্ছে মুসা (আ.) ও ফেরাউনের ঘটনা। ওই দিন মুসার (আ.) বিজয় হয়েছে এবং ফেরাউনের পরাজয় হয়েছে, সাগরে ডুবে মারা গিয়েছে। তাওহিদ ও শিরকের মধ্যে দ্বন্দ্বে তাওহিদের বিজয় হয়েছে, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং শিরক পরাজিত হয়েছে, বিলীন হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তাওহিদের ওপর বিশ্বাস একটা স্থায়ী জিনিস এবং এর ওপর ভিত্তি করেই পৃথিবীর সব সৃষ্টি। নবী-রাসুলদের সঙ্গে রাজা-বাদশাহদের দ্বন্দ্বের কারণ এটাই ছিল। রাজা-বাদশাহরা নিজেদের প্রভু মনে করত। কিন্তু নবীরা বলতেন, তুমি বান্দা, তুমি প্রভু নও, প্রভু এক আল্লাহ। অতএব, তাঁকেই প্রভু হিসেবে মানতে হবে এবং তাঁরই ইবাদত করতে হবে। দ্বন্দ্বের সূত্রপাত এখান থেকেই। পৃথিবীর ইতিহাসে মনে হয়, মুসা আর ফেরাউনের ঘটনা অনেক বড় ঘটনা। কিন্তু আমরা এটাকে কারবালার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছি। একটা হচ্ছে ইবাদতের আশুরা, যেটা মুসাকে (আ.) কেন্দ্র করে রোজা রাখতে হয়। এ ঘটনার বহু পরে মহানবীর (সা.) মৃত্যুর অনেক পরের ঘটনা হচ্ছে কারবালার ঘটনা, যেখানে হোসাইন (আ.) কারবালার প্রান্তরে অত্যাচারী শাসক দ্বারা শাহাদাতবরণ করেছিলেন। রাসুলের (সা.) ইন্তেকালের ৫০ বছর পরের ঘটনা এটা। এখান থেকেও আমাদের শিক্ষার অনেক কিছু আছে।
মূল কথা হচ্ছে, আশুরার দিন কেয়ামত হবে—এই মর্মে কোনো দলিল বা হাদিস সাব্যস্ত হয়নি।