দৃষ্টিপাত
প্রতিবাদ হোক কুকুর হত্যার
ঢাকার ব্যস্ত রাস্তা। সোনারগাঁও মোড়। বেলা ১১টা। চত্বর ঘিরে শত শত মানুষ। তাদের এই প্রতিবাদ দেশব্যাপী কুকুর নিধন বন্ধ করার জন্য। হাতে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডের অক্ষরে লেখা—দেশব্যাপী কুকুর নিধন বন্ধ করতে হবে। কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে নিরাপদ বন্ধ্যত্বকরণের মাধ্যমে, হত্যা করে নয়। প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা আইন ১৯২০ সময়োপযোগী সংস্কার করতে হবে।
এমন দাবিতে শত শত মানুষ শুক্রবার ঢাকার রাস্তায় দাঁড়াল। প্রতিবাদ করল গেল সপ্তাহে বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশনের গণহারে কুকুর হত্যার বিরুদ্ধে। ওই সপ্তাহে নগরীর আন্দরকিল্লা চকবাজার লিংক রোডের ঘাট ফরহারবেগে দেখা গেছে, বিষ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে প্রায় ১৫টি কুকুরকে। সেখানে প্রাপ্তবয়স্ক কুকুরের পাশাপাশি হত্যা করা হয়েছে শিশু কুকুরগুলোকেও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, বিষপান করিয়ে হত্যা করা হয়েছে এই কুকুরগুলোকে। তারপর ডাস্টবিন বক্সের কাছে অথবা ময়লা-আবর্জনার মধ্যে ফেলে রাখা হচ্ছে মৃত কুকুরগুলোকে। সর্বশেষ সিসিসির বর্জ্য পরিষ্কার দলটি ট্রাকে করে ডাম্প করছে কুকুরগুলোকে।
শুক্রবারের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উত্থাপিত হয়েছে একটাই প্রশ্ন, কেন এই হত্যাকাণ্ড? কুকুর নিধনের ওপর তো আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, এরপরও কেন বিষ প্রয়োগ করে চট্রগ্রাম সিটি করপোরেশন কুকুর হত্যা করল?
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া প্রতিবাদকারীদের কথা, দেশব্যাপী কুকুর নিধন বন্ধসহ জলাতঙ্কের টিকা ও বন্ধ্যত্বকরণের মাধ্যমে কুকুরের জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে তাদের বাঁচার অধিকার নিশ্চিত করা উচিত।
এ প্রসঙ্গে তারা মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি যে, ১৯২০ সালের আইন অনুসারে নৃশংস উপায়ে প্রাণী নিধন ও নির্যাতন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধু তাই নয়, চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে কুকুরের গণহত্যা চালানো হয় তা দেখে বিরূপ প্রভাব পড়েছে নানা বয়সী প্রত্যক্ষদর্শীদের মনেও।
বাংলাদেশের তিনটি প্রাণীকল্যাণ সংগঠন পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, কেয়ার ফর পজ এবং অ্যানিমেল লাভারস অব বাংলাদেশসহ বহু প্রাণী ও প্রকৃতিপ্রেমী এই প্রতিবাদী মানববন্ধনে অংশ নেন। কুকুর হত্যার প্রতিবাদে ২৮ জানুয়ারি বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আরেকটি মানববন্ধনের আয়োজন করা হবে।
লেখক পরিচিতি : সিনিয়র রিপোর্টার, একাত্তর টেলিভিশন।