বিনিময়ের নামে অসম প্রতিযোগিতা হচ্ছে : শাকিব খান
চলচ্চিত্র বিনিময়ের নামে কলকাতার ছবি দেশের বাজারে মুক্তির বিরোধিতা করে আজ ২০ জুলাই বুধবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সব সংগঠন মানববন্ধন করেছে। বেলা ১২টায় বিএফডিসির সামনে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে অংশ নেন শিল্পী সমিতির সভাপতি নায়ক শাকিব খান, সহসভাপতি ওমর সানি, সাধারণ সম্পাদক অমিত হাসান, নায়িকা অঞ্জনাসহ আরো অনেকেই। বিনিময়ের নামে কলকাতার ছবি প্রদর্শনের তীব্র নিন্দা জানান বিএফডিসির পরিচালক সমিতি, সহকারী পরিচালক সমিতি, ব্যবস্থাপনা সমিতিসহ সব সংগঠনের নেতারা।
বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির সভাপতি নায়ক শাকিব খান বলেন, ‘বিনিময়ের নামে আমাদের অসম প্রতিযোগিতার সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কলকাতার নতুন একটি ছবি আমাদের এখানে মুক্তি দিচ্ছে আর কলকাতায় চালানোর জন্য আমাদের দেশের পুরোনো একটি ছবি নিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে তারা দু-একটা হলে আমাদের ছবি চালাচ্ছে আর তাদের ছবি আমাদের দেশব্যাপী মুক্তি দিয়ে টাকা নিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর আগে তথ্যমন্ত্রী, তথ্যসচিবের সঙ্গে একাধিকবার বসেছি, ওনারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু কোনো কিছু পরোয়া না করে এরই মধ্যে কিছু আমাদের দেশে চলে এসেছে। গতকাল হাইকোর্ট একটি ছবির প্রদর্শনের বিষয়ে স্থগিত আদেশ দিয়েছেন। আমরা চাই এর স্থায়ী সমাধান। যেখানে কলকাতা পাঁচ কোটি টাকার ছবি বানায়, সেখানে আমাদের দেশের ৫০ লাখ টাকার ছবি প্রতিযোগিতায় নামলে সেটি অসম প্রতিযোগিতা হবে।’
অসম প্রতিযোগিতা যেন আর না থাকে, সে জন্য এ দেশের চলচ্চিত্র সমিতিগুলো কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শাকিব বলেন, ‘আমাদের ইন্ডাস্ট্রি একসময় মুম্বাইয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করত, কিন্তু বিশ্বে যখন টেকনোলজির ব্যবহার পরিবর্তন হয়েছে, তখন আমরা পিছিয়ে পড়েছি। কারণ আমাদের এখানে সে রকম প্রযুক্তি নেই। এ নিয়ে আমরা বারবার এফডিসি, তথ্যসচিব, তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, আমরা মানববন্ধন করছি কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী এফডিসির উন্নয়নের জন্য টাকা দিয়েছিলেন, আবার সেই টাকায় নামমাত্র কিছু প্রযুক্তি আনা হয়েছে, বাকি টাকা ফেরত গেছে। তাহলে কি আমাদের ইচ্ছে করেই ছবি বানানোর জন্য নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে?’
তাহলে চলচ্চিত্রে উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য আন্দোলন হচ্ছে না কেন, জানতে চাইলে শাকিব বলেন, ‘আমরা শিল্পী, আমরা তো আর হাতে লাঠি নিয়ে আন্দোলন করতে পারি না। আমরা সব সময় এই বিষয়ে কথা বলছি, মানববন্ধন করছি, সভা-সেমিনার করছি। ছবির মহরতে কথা বলছি, শুটিংয়ের ফাঁকে ছবির বিষয়ে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে বলছি। এখন আমাদের একটাই উপায় আছে, সেটি হলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গিয়ে আমরণ অনশন করা। বঙ্গবন্ধু আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেক করেছিলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের দিকে না তাকান, তাহলে আমাদের মরণ হবে।’
এদিকে আগামী ২২ জুলাই কলকাতার চলচ্চিত্র ‘কেলোর কীর্তি’ বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। তবে ছবিটির প্রদর্শনের ব্যাপারে গতকাল মঙ্গলবার স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ‘কেলোর কীর্তি’ ছবির মুক্তিকে কেন্দ্র করেই সরব হয়ে ওঠে বিএফডিসি। তবে আগেও ভারতীয় ছবি বাংলাদেশে মুক্তির বিরোধিতা করে আসছে বিএফডিসি-ভিত্তিক চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সংগঠনগুলো।
রাজা চন্দ পরিচালিত ‘কেলোর কীর্তি’ ছবিটিতে অভিনয় করেছেন দেব, মিমি চক্রবর্তী, যীশু সেনগুপ্ত, অঙ্কুশ হাজরা, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নুসরাত জাহান, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ প্রমুখ। ছবিটি তামিল ‘চার্লি চ্যাপলিন’ চলচ্চিত্রের অনুকরণে বানানো হয়েছে। গত ঈদে ছবিটি কলকাতার বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল।