Skip to main content
NTV Online

বিনোদন

বিনোদন
  • অ ফ A
  • ঢালিউড
  • বলিউড
  • হলিউড
  • টলিউড
  • মুখোমুখি
  • টিভি
  • সংগীত
  • নৃত্য
  • মঞ্চ
  • ওয়েব সিরিজ ও ফিল্ম
  • শোক
  • সংস্কৃতি
  • স্বীকৃতি
  • শুটিং স্পট
  • অন্যান্য
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • বিনোদন
ছবি

মেট গালা ফ্যাশনে দ্যুতি ছড়ালেন কিয়ারা

গ্রীষ্মের ফুলে ভিন্নরূপে রাজধানীর প্রকৃতি

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার

পুলিশ সপ্তাহ শুরু

স্টাইলিশ মিম

পোপের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ড. ইউনূস

ভ্যাটিকানে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যানুষ্ঠান

তিন শূন্য তত্ত্ব নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা

পোপের কফিনে শেষ শ্রদ্ধা

ভিডিও
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৪ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৪ (সরাসরি)
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫১০
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫১০
গানের বাজার, পর্ব ২৩১
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৮৬৬
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৮৬৬
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ০৮
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ০৮
নাটক : চায়ের দোকানদার
নাটক : চায়ের দোকানদার
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮০
এই সময় : পর্ব ৩৮১২
এই সময় : পর্ব ৩৮১২
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৭
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৭
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ০২
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ০২
নিশীথ সূর্য
১৬:৩১, ১২ জানুয়ারি ২০১৬
নিশীথ সূর্য
১৬:৩১, ১২ জানুয়ারি ২০১৬
আপডেট: ১৬:৩১, ১২ জানুয়ারি ২০১৬
আরও খবর
টিনা রাসেলের নতুন গান ‘এই যে আমায় ব্যাকুল করে’
‘ইন্ডিয়ান আইডল’ বিজয়ী পবনদীপের হাড় ভেঙেছে, মাথাতেও আছে চোট
‘বাবার সাইকেল’ গান নিয়ে আসছেন নাহিদ হাসান
‘ইন্ডিয়ান আইডল’ বিজয়ী পবনদীপ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত
কফি হাউজ গানের অজানা গল্প

গান কথা গল্প

আমি বিপরীত বাতাসে কাজ করা লোক : শেখ সাদী খান

নিশীথ সূর্য
১৬:৩১, ১২ জানুয়ারি ২০১৬
নিশীথ সূর্য
১৬:৩১, ১২ জানুয়ারি ২০১৬
আপডেট: ১৬:৩১, ১২ জানুয়ারি ২০১৬
শেখ সাদী খান। ছবি : আয়াতুল্লাহ মামুন

শেখ সাদী খান, গুণী এই সংগীত পরিচালকের কাজ ও প্রাপ্তি ঈর্ষণীয়, আর যদি পারিবারিক সংগীত ঐতিহ্যের দিকে তাকানো যায়, সেখানেও দেখা যাবে গর্ব করার মতো রয়েছে অনেক উপাদান। ভারতীয় উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীত পরিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিবপুর গ্রামের খাঁ পরিবারের সন্তান এই সংগীত পরিচালক। বাংলা ও চলচ্চিত্রের গানের মধ্য দিয়ে নিজের নামকে যেমন করে ফেলেছেন কালোত্তীর্ণ, তেমনি সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা গানকে। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানের ভাতিজা, ওস্তাদ আয়েত আলী খানের সন্তান, বিখ্যাত ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান, বাহাদুর হোসেন খান ও সংগীতজ্ঞ মোবারক হোসেন খানের ছোট ভাই জীবন্ত কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক শেখ সাদী খান। জন্ম ১৯৫০ সালের ৩ মার্চ। মা বেগম আদর খান। নয় ভাইবোন। তাঁরাও বিচরণ করেছেন সংগীতের আঙিনায়। তাঁদের হাতেখড়ি বাবার কাছেই। শেখ সাদী প্রথমে তবলা বাজানো শিখেছেন। তারপর মেজো ভাই ওস্তাদ বাহাদুর খান তাঁকে নিয়ে যান কলকাতায়। পরে তাঁর কাছ থেকেই উচ্চাঙ্গ সংগীতে তালিম। পরে ১৯৬৫ সালের দিকে বাংলাদেশে ফিরে এসে চট্টগ্রাম রেডিও স্টেশনে বাবার হাত ধরে অডিশন দিতে যান। সেখানে চাকরি পেয়ে থেকে যান। পরে ৬৭-৬৮ সালের দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে কাজের পাশাপাশি ঢাকা মিউজিক কলেজে পড়াশোনা করেন। তারপর মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতায় গিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মাতৃভূমিতে ফিরে আবারও রেডিওতে যোগ দেন এই গুণী পরিচালক। আজ এই সংগীতজ্ঞের কিছু কালজয়ী গানের ইতিহাস জানব আমরা, তাঁরই মুখে।

ডাকে পাখি খোল আঁখি, দেখো সোনালি আকাশ

ছবিটির নাম ছিল ‘প্রতিরোধ’। সম্ভবত ’৮৩-৮৪ সালের দিকের ছবি। এই ছবির যখন সিচ্যুয়েশন বোঝানো হলো, তখন আমার সঙ্গে গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবুও ছিলেন। আমার বাসাতেই সিনেমাটির সিচ্যুয়েশন বোঝানো হয়েছিল। একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র বোন তার ভাইদের সকালে ঘুম থেকে ডেকে তুলবে। এ রকম একটি সিচ্যুয়েশনের ওপর গান হবে। এটা পাওয়ার পর আমি আর বাবু যার যার মতো করে ভাবতে লাগলাম। পরেরদিন বাবু আর আমি একসঙ্গে রেডিওতে রিকশায় করে যাচ্ছি। তখন শাহবাগ রেডিওতে আমি চাকরি করি। এমন সময় এই গানটির প্রথম চারটি লাইন দিয়ে বলল, এ রকম কথা হলে কেমন হয় দেখোত?  কথাটি ছিল এ রকম ...

‘ডাকে পাখি খোল আঁখি

দেখো সোনালি আকাশ

বহে ভোরের বাতাস’

আমি বললাম, খারাপ না। একটু ছড়া ছড়া ভাব আছে। ভালোই লাগবে মনে হয়। এভাবেই আলোচনার মধ্য দিয়ে রিকশায় থাকতেই গুনগুন করে সুর করে ফেললাম। বেইলি রোড দিয়ে বের হয়ে শাহবাগ যাচ্ছি। তখন প্রকৃতিও অনেক সুন্দর ছিল। এখনকার মতো এত জ্যাম ছিল না। পেছন থেকে কেউ বড় আওয়াজে হর্নও দেয় না। কী সুন্দর জীবন তখন। কোনো ডিস্টার্ব নাই। বাতাসে পাতার আওয়াজও কানে পাচ্ছিলাম। সুরটা বাবুকে শুনাতেই বলল, সাদি ভাই গানটি খুব ভালেঅ লাগছে তো! আমি বললাম এটিই হবে। ছড়াগানই করব আমরা। তারপর তো পরিচালক শুনে আমার সঙ্গে তর্ক করল। ‘দূর মিয়া কী গান করছেন, মনে হইছে কি রবীন্দ্রসংগীত, না, কী করলেন এইটা? মানুষ তো সব ঘুমাই যাইব! আমি বললাম, ঘুমাবার জন্য না, ঘুম ভাঙানোর জন্য গানের সুরটি করেছি। পরিচালক বলেন, ঠিক আছে ঘুম ভাঙার পরে গানটি শুনে আবার ঘুমাই যাইব তো! পরিচালকের নাম ছিল বেনজির আহমেদ। এই গানটি দৃশ্যায়নে যে অভিনয় করেছেন সেই আল্পনা গোস্বামীই কোরিওগ্রাফ করেছেন। এই সিনেমার হিরোইন ছিলেন। ভারতের শিল্পী। এই গানের কোনো ডান্স ডিরেক্টর ছিল না। তিনি নিজেই করেছেন। তো পরে গানটি রেকর্ডিং করলাম। কিন্তু পরিচালকের একই কথা। কী গান ভাই? আমি তো সিনেমাতে গানটি লাগাতে পারব না। আমি বললাম, এই গানটি একটি ভালো গান হবে। যদি গানটি ভালো না লাগে তাহলে যে পয়সাটা খরচ যাবে তা আমি দিয়ে দেব। প্রডিউসার তো শিক্ষিত মানুষ ছিলেন। তিনি এই সুরটি মেনে নিলেন। তারপর গানটির পিকচারাইজেশন হলো, এডিট হলো তখন গানটি দেখে সবাই বলল, চমৎকার একটি গান হয়েছে। গানটি সকালের রাগের ওপরই করেছি। ভোরের পরিবেশটার জন্য আমি সেই রাগটুকু মিশ্রণ করে আমি এর সুর করেছি।

আমি গানটি সুর করার পর শিল্পী সিলেক্ট করলাম হৈমন্তী শুক্লাকে। হৈমন্তীকে দিয়ে গাওয়ানোর জন্য এবং ওই নায়িকা পারফরমেন্স করাতে আমার এই গানটি মানুষের হৃদয়ে সারা জীবনের জন্য রয়ে গেল। কিন্তু এই গানটি যদি অন্য কাউকে দিয়ে গাওয়াতাম তাহলে এত সুন্দর হতো না। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি। এটা আমার ক্যালকুলেশনে ছিল। এই গানটি অনেকে গেয়েছে কিন্তু হৈমন্তী শুক্লার যে গায়কি তা কেউ দিতে পারত না। তাঁর ভয়েস থ্রোয়িংটাই আলাদা। গানটি রেকর্ড হয়েছিল কলকাতায়, সংগীত শিল্পী উষা উত্থুপের স্টুডিও ভাইব্রেশনে। তারপর তো সকালের গান বললেই প্রথমেই এই গানটির কথা আসবেই।

চাঁদে কলঙ্ক আছে যেমন/পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই

নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা গান। ’৭৮-৭৯ সালের দিকের গান। সুবির নন্দীকে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গান করানোর একটা চিন্তাভাবনা ছিল। আমি ভাবলাম ওকে দিয়ে এ ধরনের গান গাওয়ানো যেতে পারে। সে চিন্তা থেকেই ক্ল্যাসিক বেইজটা রেখেই নানা রকম গান করলাম। ভাবলাম এর মধ্য দিয়ে তাকেও যদি তৈরিও করে নেওয়া যায়। তখন সম্ভবত সুবীরের ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’ গানটি কিছুটা জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ওই সময়টাতেই ‘পাহাড়ের কান্না দেখে তোমরা তাকে ঝরনা বলো’ গানগুলোও করা। মনে মনে একটা ইচ্ছা হলো যে কোনো একটা ক্যাসেট করব। তখন মিডিয়াতে শুধু রেডিও বাংলাদেশ আর বিটিভি একমাত্র মাধ্যম ছিল। গানগুলো যদি মানুষের ঘরেও নেওয়া যায় এ চিন্তা থেকেই ডিসকো রেকর্ডিং থেকেই এই গানগুলো বের করা হয়েছিল। পরে ফিল্মে যখন চাইল তখন আবারও রিমেক করতে হয়েছে।

কোনো কোনো পরিচালক এসে বলল, আমার সিচ্যুয়েশেনর সঙ্গে গানটি ভালো যাবে। আপনার এই গানটি ব্যবহার করতে চাই। তাই ভাবলাম, কাওয়ালি গানের স্টাইলে এই গানটি করলে কেমন হয়। কাওয়ালি করলাম না কিন্তু কাওয়ালি স্টাইল নিলে একটু মধ্য লয়ে গানটি আমার মতো করে সুর করি। তবে এই গানটি মানুষের কাছে যেতে সময় লেগেছে। যেহেতু গানটি একটা শক্ত বন্দিশের গান। সেটা যে গাইবে তাকে অন্তত পক্ষে সংগীতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকলে এই গান গাওয়াটা কষ্টকর। আরেকটা হতে পারে যদি গায়কের ঐশ্বরিক ক্ষমতা থাকে তাহলেও হয়ে যেতে পারে। তবে গানটি গাওয়ার পরে মনে হয়েছে সুবির নন্দী গানটি ভালো গেয়েছে এবং ভালো একটি গান হয়েছে। তখন তার প্রমিজিং টাইম। তার ইচ্ছাশক্তিও অনেক বেশি ছিল। চেষ্টাও ছিল। অনেক ভালো ভালো শ্রোতা এই গানটি গ্রহণ করেছে।

আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়/কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়

রেডিওর ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিসের জন্য ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’ গানগুলো করলাম। তারপর রেডিওতে করলাম ‘আমার শেষ কথার শেষ উত্তর দিবে না হয় ভালোবাসার এখানেই শেষ হবে’। যা পরে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে বের হয়। ওইখানে আরো গান ছিল। তবে যেটি খুবই বিখ্যাত হয়েছিল ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়, দুঃখ হারায় না’। এগুলো সব কিন্তু রেডিওর গান। তারপর ‘আমার একদিকে তুমি একদিকে মরণ, মাঝখানে আমার কিছু নেই’। মোহাম্মদ রফিকুজ্জামানের লেখা। তখন গানগুলোও একসাথে করেছি। যাইহোক ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’ গানটি কবি জাহিদুল হকের লেখা। রেডিওর ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিসের জন্য প্রথমে করার পর বুলবুল আহমেদ অভিনীত  ‘মহানায়ক’ চলচ্চিত্রের জন্য আবারও করতে হয়। এবং যেহেতু ফিল্মে গানটি ব্যবহার হবে তাই আবারও নতুন করে মিউজিক করতে হয়েছে।

আগের রেকর্ড করা এই গানটি নতুন করে করতে গিয়ে কিছু কিছু যোগ করেছি। ইন্সট্রুমেন্ট ভেরিয়েশন করেছি। গানের লয়টা সিনেমার সিচ্যুয়েশন অনুযায়ী একটু বাড়াতে হয়েছিল। তো এভাবে করতে করতে সুবীরকে নিয়ে অনেক রকমের ট্রাই করেছি। যেমন আমি তাকে আরো কিছুটা ফোক-ক্ল্যাসিক মিক্সড দিয়ে আরো গান করিয়েছি ‘হায় গো হৃদয়দাতা, হায়গো হৃদয়দাতা, তোমার চোখেরই সামনে আমার হৃদয় হলো খুন’- এটা খুব জনপ্রিয়তা পায়। সুবীরকে আসলে একটা নির্দিষ্ট স্টাইলের জন্য আমি পছন্দের তালিকায় রেখেছিলাম। ওকে দিয়ে আমি কিন্তু খুব লাফানো ঝাঁপানো গান করাইনি। আর তাকে দিয়ে ওসব গান ভালো লাগবে না। তার চিন্তা, ভাবন বা গায়কির প্যাটার্ন তার গলার যে ধাঁচ সেটা মাথায় রেখে যারাই গান করিয়েছে তারা সাকসেসফুল হয়েছে। আমাদের দেশে ভার্সেটাইল আর্টিস্ট নেই। আমার তো নজরেই পড়েনি। হ্যাঁ, অনেকেই হয়তো গাচ্ছে। কিন্তু ভার্সেটাইল বলে মনে হচ্ছে না। সাবিনার গলাতে কোন আইটেম গানকি ভালো লাগছে বা লাগবে? তার গলা সব সময়ই মেলোডি প্রধান গান মানাবে। রোমান্টিক, স্যাডসং, ফোক হতে পারে। রুনা লায়লাও তাই। একজন সুরকার হিসেবে আমি বলছি। আমি ভার্সেটাইল বলি আশা ভোঁসলেকে। লতাজিকেও ভার্সেটাইল বলি না। আমি নিজেকেও ভার্সেটাইল সংগীত পরিচালক বলব না।

তবে হ্যাঁ, গানের সঙ্গে অর্কেস্ট্রেশনের মিশ্রণটা আমার ভালো হয় তবে ক্যাবারে সং বা আইটেম সং করার ক্ষেত্রে নিজেকে দুর্বল বলেই মনে করি। একজন কম্পোজার হিসেবে করতে পারি কিন্তু ওইগুলো করে যে দক্ষতা রাখে তার মতো আমি হয়তো করতে পারব না। এটা হচ্ছে আমার নিজেকে নিজের যাচাই করার ব্যাপার। মেলোডি ও ক্লাসিক এবং স্যাড গানের জন্য আমার ইন্দ্রিয়গুলো খুব পাওয়ারফুল বলে আমি মনে করি। আমি খুব তাড়াতাড়ি আমার ধ্যানটাকে ওই জায়গায় নিয়ে যেতে পারি।

জীবন মানে যন্ত্রণা, নয় ফুলের বিছানা

সাবিনা ইয়াসমিন ‘এখনই সময়’ চলচ্চিত্রের এই গানটি গেয়ে ‘বাচসাস’ পুরস্কার পায়। এটি আমার সংগীত পরিচালনা করা প্রথম চলচ্চিত্র। ১৯৮০ সাল। তখন থেকেই এককভাবে সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করি। গানটির গীতিকার ছিলেন মনিরুজ্জামান মনির। এই গানটি তো ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। তখন তো সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লাইলা, আবিদা সুলতানারা সিনেমায় একচেটিয়া প্লেব্যাক করছেন। এই সিনেমার তিনটি গানও খুব জনপ্রিয়তা পায়। আরেকটা গান ছিল এমন ‘একটা দোলনা যদি কাছে পেতাম’। এটা আবিদা সুলতানার গাওয়া খুব মিষ্টি একটি গান। এটিও মনিরুজ্জামান মনিরের লেখা। এবং আরেকটি গান আমি প্রথমবারের মতো প্রণব ঘোষকে দিয়ে গাওয়ালাম। প্রণব ঘোষ পরে জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক হয়ে উঠেছিল। ও আমার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরত, থাকত। ও আমাকে গুরু মানত। এবং সে প্রচণ্ড ভক্তি করত আমাকে। এ রকম ভক্তি আমার অন্য শিষ্যরা করে না। তো যাইহোক, একটা হালকা ধাঁচের গান ছিল সেটি। ‘আমি রাজ্জাক হইলাম না, কবরি পাইলাম না’। সে রাতারাতি পপুলার হয়ে গেল। পরে সংগীত পরিচালক হিসেবে দ্বিতীয় সিনেমা ছিল শহীদুল হক খানের ‘কলমিলতা’। ওই সিনেমার গান তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। তবে বেশ ভালো গান ছিল সেখানে। যেমন রফিকুল আলম এবং শম্পা রেজাকে দিয়ে গাইয়েছিলাম, ‘রঙ্গিনী আমি’। এ ছাড়া আবদুল জব্বার আর আপেল মাহমুদকে দিয়ে ডুয়েট গাইয়েছিলাম ‘আমাদের ঘোষণা, স্বাধীনতা’। এ দুটি গানের গীতিকার ছিলেন আবু হেনা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল।

ভালোবাসলে সবার সাথে ঘর বাঁধা যায় না

এই গানের কাহিনীটা বেশ অন্যরকম। একসময় আমি রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে গেছিলাম। সংসার তো, মনটা ভালো লাগছিল না। মানুষের হয় না, মুডটা খারাপ ছিল। গেলাম কবি, গীতিকার মাহফুজুর রহমান মাহফুজের বাসায়। বললাম, ‘মাহফুজ একটা গান লেখো।’ তারে বললাম, ‘ভালোবাসা যতই করো, ভালোবাসলে ঘর বাঁধা যায় না মিয়া! লেখো এইটা নিয়া গান লেখো’, ওইটা আলাপ আড্ডা করতে করতে নাস্তাটাস্তা খেয়ে খেয়ে এই গানটি তৈরি হয়ে গেল। এই যে কোনো একটা কারণে একটা গান সৃষ্টি হয়ে গেল, এটা আমার সারা জীবন থেকে যাচ্ছে। ইতিহাস হয়ে গেল। যতদিন পৃথিবী থাকবে, বাংলা গান যতদিন থাকবে, কোনো না কোনো জায়গায় গানটি থাকবে। এইভাবে করে করে ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিসের জন্য গানটি তৈরি করলাম। বললাম, গানটি শাম্মী আখতারকে দিতে। যা হোক শাম্মী আখতারকে দেওয়া হলো এবং অত্যন্ত একটা কঠিন গান হয়ে গেল। কিন্তু একটি কঠিন গান মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেল, গ্রহণযোগ্যতা পেল। কারণটা কী, প্রত্যেকটি মানুষের মনের মধ্যে এই কথাগুলোর মতো যন্ত্রণা তো আছেই। ভালোবাইসা বিয়ে করলাম তারপরও শালার বনিবনা হচ্ছে না। এটা কেমন হইল? তার চেয়ে না করলেও ভালো হতো। অন্য একজনরে বিয়ে করতাম! মানুষের আফসোসের তো শেষ নাই। মানুষ হলো একটা পাওয়ার পর আরেকটা চায়। এইটা থাকেই।

যা হোক এটার প্রায় ৩০ বছর পর চলচ্চিত্রনির্মাতা জাকির হোসেন রাজু আমারে ডেকে নিয়ে বললেন, তিনি এই গানটি সিনেমায় টাইটেল গান হিসেবে ব্যবহার করতে চান। আমি বললাম, আপনার সিনেমার সঙ্গীত পরিচালক কে? উনি উত্তরে একজনের নাম বললেন। আমি বললাম, এভাবে একটা গান সিনেমার জন্য তো আমি দিই না। তারপর তার একান্ত অনুরোধে আমি বললাম ঠিক আছে আমি গানটি দিব, যদি সিনেমার স্ক্রিনে সংগীত পরিচালক হিসেবে আলাদা প্লেট ব্যবহার করো। তখন রাজু অনুরোধ করে বলেন, গানটি তিনি কনকচাঁপাকে দিয়ে গাওয়াতে চান। আমি বললাম, ‘না! এভাবে হলে আমি গানটি দিব না। যার গলায় গানটি পরিচিতি পেয়েছে আমি তাকে দিয়েই গানটি করাব’। তখন পরিচালক বলেন, উনি কি এখন গানটি আগের মতো গাইতে পারবেন? তখন বললাম, ‘সেটা আমার দায়িত্ব’। যাইহোক, শাম্মী আখতারের সঙ্গে আলাপ করে হাফ স্কেল নিচে গাওয়ালাম। রেজাল্ট একই এলো। প্রায় ৩০ বছর পর শাম্মী আবারও গানটি গাইল। যদিও প্রথমে শাম্মী গাইতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান ছিল এবং একপর্যায়ে অন্যকে দিয়ে গাওয়ানোর জন্যও রিকোয়েস্ট করে। কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা ছিলাম এবং বললাম, এই গানটি গাও, এর মধ্য দিয়ে তুমি পুরস্কারও পেয়ে যেতে পারো’। তোমার জীবনে এটিই ভালো গানের জন্য স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য একটি চান্স। আসলেই পরে সে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। 

কাল সারা রাত ছিল স্বপ্নের রাত

আমি আর গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু খুব ক্যাজুয়ালভাবে এই গানটি করেছিলাম। আমি আর বাবু বসে আছি। তখন একজন সংগীতশিল্পী এসে বললেন তিনি ক্যাসেট করবেন, তাঁর জন্য গান করে দিতে। তো করতে গিয়ে দেখি এই গানটির সুর বের হয়ে গেল। ওই শিল্পী ওনার মতো করেই গেয়েছেন। পরে গানটি শোনার পর বাই দ্য বাই একজন প্রডিউসার বললেন, ‘এই গানটি আবারও করেন তাহলে আশা ভোঁসলেকে দিয়ে গাওয়াব’। তারপর গানটি ওনাকে দিয়ে গাওয়ানোর পর সিনেমা এবং রেডিওতে বাজার পর চমৎকার একটি আধুনিক বাংলা গান হয়েছে। মজার তথ্য হলো, অনেকেই জানে না গানটি আমার সুর করা। সবাই ভাবে, এটি ভারতের কোনো সুরকারের সুর করা গান। গানটি কলকাতায় ট্র্যাক করে, ক্যাসেটে গানের সুরটি গেয়ে মুম্বাইতে পাঠালে সেখানেই আশা ভোঁসলে গানটি করেন। এবং ক্যাসেটে বলে দিলাম, উনি চাইলে ওনার মতো করে কিছু ইম্প্রোভাইজও করে নিতে পারেন। এই গানটি তাঁর কাছ থেকে যে গায়কিটা পাব তা আমার গানে আমি যেটা দিতে চাচ্ছি, তার চেয়ে আরো একটু বেশি পাওয়া হবে। এমনকি আমি যা এক্সপ্রেস করতে পারছি না তাও তার কাছ থেকে পাওয়া যাবে। সে জন্য কিন্তু গাওয়ানো।

দুঃখের বিষয় এই চলচ্চিত্রটি কিন্তু মুক্তি পায়নি। কিন্তু এই সিনেমায় আশা ভোঁসলে এবং আমাদের সাবিনা ইয়াসমিনকে দিয়ে এবং খুরশীদ আলমকে দিয়ে দ্বৈত গান করিয়েছিলাম। এমনকি আশা ভোঁসলেকে দিয়ে একটি বাইজি খানার গানও করিয়েছিলাম। আমার কাছে এখনো আছে। কিন্তু গানগুলো কাজে লাগেনি। এই গানটি প্রথমে আশা ভোঁসলে করেন। পরে বেবি নাজনিন এসে বলল, চাচা আমি এই গানটি গাইতে চাই। যদি ক্যাসেটে করি তাহলে হিট হতে পারে এবং বিভিন্ন জায়গায় গাইতেও পারব। আমি চিন্তা করলাম যে খারাপ কথা বলে নাই। এটা রিমেকের মতোই তাকে দিয়ে করলাম। সাউন্ডট্র্যাক থেকে বের হলো। বেবি নাজনিনও ভালো গেয়েছে। ও গাওয়াতে গানটি আরো তাড়াতাড়ি মানুষের কাছে চলে গেল। কিন্তু আশা ভোঁসলের যে এক্সপ্রেশন আমি পেয়েছি, তার গায়কীতে সেটা হয়তো বেবি অনুসরণ করেছে। ভালো হয়েছে।

আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে শুকতারা

আশা ভোঁসলেকে দিয়ে ‘কাল সারারাত’সহ বেশ কয়েকটি গান যে সিনেমার জন্য করা হলো তা শেষ পর্যন্ত রিলিজ হয়নি। পরে ওই গানগুলো থেকে দুটি গান ওই চলচ্চিত্রের পরিচালক অন্য একটি সিনেমায় ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে আশা ভোঁসলের ‘কাল সারা রাত’ আর কুমার শানুর ‘আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে শুকতারা’ গান দুটি ব্যবহার করা হয়। কুমার শানুকে আমি প্রথম বাংলাদেশের সিনেমায় গান গাওয়াই। পরে শুনেছি এই গানটি অন্য কোনো মিউজিক ডিরেক্টরের নামে কলকাতায় বের হয়েছে। গীতিকারও নাকি অন্য একজনের নাম দিয়েছে। আমি কলকাতা গেলে ওই ক্যাসেট কোম্পানিকে ধরব ভাবছি। বলব, দয়া করে যা করেছেন, প্লিজ নামগুলো পরিবর্তন করে দেন। এই গানটিরও গীতিকার ছিল নজরুল ইসলাম বাবু। এই গানটির স্টাইলটি অন্যরকম। আমি নিজে রাহুল দেব বর্মণের খুব ভক্ত। ওনার মতো ডাইনামিক এক্সট্রিম কম্পোজার আর আসেনি। উনি কিন্তু আমার মেজো ভাই, আমার সংগীত গুরু ওস্তাদ বাহাদুর খানের কাছে কিছুদিন সরোদের তালিম নিয়েছিলেন। আমিও ভাইয়ের কাছে অনেক কিছু শিখেছিলাম।

আমি আমার বাবা ওস্তাদ আয়েত আলী খানের কাছ থেকে হাতেখড়ি নিয়েছি ঠিকই কিন্তু সংগীতে তালিম নিয়েছি ভাই ওস্তাদ বাহাদুর খানের কাছে। আমার মেজো ভাই বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের ‘সুবর্ণ রেখা’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘যুক্তি তক্কো গপ্পো’ এবং ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেন। এটা আমাদের জন্য অনেক গর্বের ব্যাপার। যাইহোক যেহেতু রাহুল দেব বর্মণ ভাইয়ের শিষ্য ছিল তাই তাঁর মিউজিক্যাল স্টাইল এবং ঘারানাটাতে আমি অনেক মিল খুঁজে পেতাম। মেজো ভাই আমাকে এক পর্যায়ে বলেছিলেন, সেখানে থেকে যেতে। তাহলে তিনি মুম্বাই পঞ্চমের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। কিন্তু দেশে পিছুটান ছিল, বাবা অসুস্থ ছিলেন। তাই আর যাওয়া হলো না। বাবা ওস্তাদ আয়েত আলী খান সুরবাহার বাজাতেন।

আমি চিরকাল প্রেমেরো কাঙ্গাল/ ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও

তখন ইন্ডাস্ট্রিতে এন্ড্রু কিশোরের আধিপত্য চলছে। আমি ভাবলাম এন্ড্রু কিশোরকে একটা অপোজিট গান দেই। যেহেতু সে কিশোর কুমারের ফলোয়ার ছিল, তাকে দিয়ে এ ধরনের গান গাওয়ালে কেমন হয় দেখি। তাকে এই ‘আমি চিরকাল প্রেমেরো কাঙ্গাল’ গানটি গাওয়ালাম। তারপর তো এক্সট্রা অর্ডিনারি একটা গান হলো। ফোক এবং ক্ল্যাসিক মিক্সড করে গানটি করেছিলাম। এই গানটি ‘প্রিন্সেস টিনা খান’ নামের চলচ্চিত্রের গান। তারপর এন্ড্রুকে একটু হালকা ধাঁচের একটা গান দিই ‘ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও, আমার শিউলি নাও’। এই গানটি ওর ক্যাসেটের জন্য করে দিয়েছিলাম। এই দুটি গানের গীতিকার ছিলেন মনিরুজ্জামান মনির। তখন রাজধানীর ইস্কাটনে একটা গীতিকবি সংসদ নামের ক্লাব ছিল। সেখানে আমরা বসতাম। সেখানে বসে বসে গান সুর করতাম। গীতিকাররা গান লিখত। আর্টিস্ট এলে তাদের হাতে গান তুলে দিতাম। সেখান থেকেই অনেক সুন্দর সুন্দর গান হয়েছে।

তুমি রোজ বিকেলে আমার বাগানে ফুল নিতে আসতে

কুমার বিশ্বজিৎ তো ‘তোরে পুতুলের মতো করে’ গানটি দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকল। যেহেতু পরিচিতি পেয়েছে, দেখা আসা যাওয়া হয়, রেডিওতে এনলিস্টেড হলো সে। ভাবলাম ওকে দিয়ে অন্য রকম গান করালে ভালো লাগবে। চেহারা-ছবিও সুন্দর। টেলিভিশনে গাইলে পাবলিকের কাছে ভালো লাগতে পারে। এই গানটি সম্ভবত কোনো একটি অনুষ্ঠানে সৈয়দ আবদুল হাদী ভাইকে দিয়ে কেউ গাইয়েছিল। ওই সময় কোনো একজন সুরকার গানটি সুর করে গানটি করান। কিন্তু ওই সুরটি গীতিকারের মনোঃপূত হয় নাই। তাই গানটি একদিন বাজার পর আর বাজানো হয়নি। তো গানটির গীতিকার মাহফুজুর রহমান মাহফুজ বলল, খানসাহেব গানটি আপনি করেন। আমি বললাম, ‘গানটি করব কেন, গানটি নাকি তোমার আগে সুর হইছে? আমি করতে যাব কেন? আমার বন্ধু সুরকার করছে। পারব না’। তখন মাহফুজ বলল, ‘না না সে অনুমতি তিনি দিয়েছেন। আপনি করেন’। পরে তার জোরাজুরিতে গানটি করলাম। ওই দিন শাহবাগ কমার্শিয়াল সার্ভিসে রেকর্ডিং ছিল। সেদিন স্পটে বসেই গানটি সুর করলাম। তারপর বিশ্বজিৎ এলো। আগের সুরটি আমি শুনিনি। পরে গানটির সঙ্গে কিছু এডলিফ যোগ করলাম। কিছু ব্যান্ডের নমুনাও দিয়ে দিলাম। তারপর তো গানটি ইতিহাস। এমনকি বিজ্ঞাপনেও ব্যবহার হয়েছে। তুমুল জনপ্রিয় হলো। এবং কুমার বিশ্বজিৎ সেকেন্ড টার্ন করল।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, যখনই এ ধরনের কোনো কালজয়ী গান জন্ম নেয় এবং এই সমস্ত গান শিল্পীরা স্টেজ বা ফোনো লাইভে যখন করেন তখন গানের স্রষ্টার কথা বলতে ভুলে যান। আসলে তাঁদেরও দোষ নেই। কারণ তাঁরা তখন এতটাই সুনাম শুনতে শুনতে মোহাবিষ্ট হয়ে থাকেন যে আসল কারিগরদের কথা একেবারেই মনে আসে না। আমি কুমার বিশ্বজিৎকে হৈমন্তী শুক্লার সঙ্গে প্রথম ডুয়েট গান করার সুযোগ করে দিই। গানটি খুবই জনপ্রিয় হয়। গানের নাম ‘শোন সোমা একটু দাঁড়াও কথা শুনে যাও। তারপর ‘কি নাম বলো না তোমার’ শিরোনামের আরেকটি গানও খুব জনপ্রিয় হয়।  

তোমার চন্দনা মরে গেছে

মিতালী মুখার্জীর সুপারহিট গান এটি। মনে হয় ১৯৭৯ সাল। মিতালী ভারতের বরোদা থেকে পড়াশোনা করে এলো। তখন উঠতি সংগীত পরিচালক হিসেবে আমি, আলাউদ্দিন আলী, লাকী আখন্দ মোটামুটি একটু একটু করেই মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি লিড দিচ্ছি। তখন টেলিভিশন থেকে বলা হলো আমি মিতালীর জন্য ছয়টা, বাকি ছয়টা গান করবে আলাউদ্দিন আলী। আমি শুনলাম মিতালী খুব ভালো গান গায়। তো আমি আমার মতো করলাম। তোমার চন্দনা মরে গেছে, কেন যে বলেছি’, ‘একটা কিছু করো হয় নিজের হাতে মালা পড়াও নাও নিজের হাতে মারো’ এসব গান করলাম। আরো একটি হালকা আঙ্গিকের সুর করলাম ‘ছোট্ট বেলা মা আমাকে হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে পায়ে নূপুর পরাত’। তারপর আরেকটা শক্ত গান দিলাম ‘তোমাকে পাওয়ার আগে হারানোর ভয় ভরে আছে’ এমন। আরেকটা ‘ও নিঠুর গাঙ্গের মাঝি’। মডার্ন ফোক গান। গীতিকার ছিলেন মাহফুজুর রহমান মাহফুজ, মনিরুজ্জামান মনির এবং মুন্সি ওয়াদুদ। তারা দুটি করে গান লেখেন। ওই সময়টাতেই আমার আর আলাউদ্দিন আলীর গান করে মিতালী খুবই পপুলার হয়ে গেল। তার বাংলাদেশে ভিত্তি শক্ত হয়ে গেল। কিন্তু সে থাকল না। আবার ভারতে চলে গেল। কিন্তু সে যদি বাংলাদেশে থাকত টপমোস্ট গায়িকা হিসেবেই থাকত। এবং তিনজনের একটা কম্পিটিশন থাকতো। রুনা লাইলা, সাবিনা ইয়াসমিন এবং সে। কেউ কাউকে ফাঁকি দেওয়ার কোনো সময়ই থাকত না। যাইহোক আমাদেরই দুর্ভাগ্য।

আমাদের দেশের শিল্পীদের পরিকল্পনায় ভুল আছে বলে আমার মনে হয়। কারণ তারা টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্ঠানগুলোতে শুধু জনপ্রিয় এবং পুরোনো গান করেন। অথচ নতুন এবং প্রচারের মুখ না দেখা কিন্তু ভালো গান সেগুলোও করা উচিত। তাহলে দর্শক এবং শ্রোতারা নতুন এবং ভালো গান শুনতে পারত। জনপ্রিয় গানের পাশাপাশি দর্শকদের বলা উচিত যে, অনেক জনপ্রিয় গান শুনলেন এবার অন্য নতুন বা পুরোনো গান শুনুন। এই কাজটিও তাঁরা করেন না। যা হোক এইগুলো বলেও আর লাভ নাই।

একি খেলা চলছে হরদম

সবকিছু তাণ্ডব লাগিয়ে দেব এই ভাবনা থেকেই করা আরকি বলতে পারেন। সারা পৃথিবীতে তখন এখনকার মতো তাণ্ডব চলছিল। গোলাগুলি, বোমা হামলা, মানুষ খাইতে পারছে না। এগুলো নিয়ে গান করলাম। এই গানটির আমি ইংলিশ ভার্সন করাচ্ছি। জাতিসংঘে পাঠাব আর ইউটিউবে দেব। আর সারা বিশ্বকে বলব যুদ্ধ বন্ধ করো। এমনিতে আমার দেশের গান কম করা হয়েছে। করেছি। কিন্তু তেমন একটা না। একদিন হলো কি, ইস্কাটনের গীতিকবি সংসদে আড্ডা মারছি। কাজ না থাকলে সেখানেই যেতাম আমি। তখন মনের মধ্যে কিছু একটা করতে হবে এমন একটা তাগিদ ছিল। বিশ্বের পরিস্থিতি ভালো ছিল না। পানের দোকানে পান খাচ্ছিলাম। তখন দোকানের টিভিতে দেখলাম যে মিডলইস্টে গণ্ডগোল চলছে। তখন আমি গীতিকার মুন্সি ওয়াদুদকে বললাম, ‘কিরে এসব কী চলছে খেলা!!! আজব খেলা রে। এই মুন্সি একি খেলা চলছে?’ মুন্সি বলে, সাদি ভাই এই কথা নিয়ে গান করব আসেন। তারপর যুদ্ধের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে গানটি করলাম। গানটিতে ভাসমান মানুষ, ফুটপাত, বিবেককে ফাঁকি দিয়ে বেঁচে থাকার একি নিয়ম? পৃথিবীটা বিভক্ত আজ, মানবতার কি কোনো দাম নাই?...এ টাইপের চমৎকার কথা উঠে এলো। তারপর রফিকুল আলমকে বললাম, তুমি এই গানটি করো। অন্য ধরনের গান গাও একটা। তারপর তো সবাই জানে। এই গানটি এখনো প্রাসঙ্গিক।

গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে আমার বেশি কাজ করা হয়েছে। পরে মুন্সি ওয়াদুদ। বাবুর চিন্তাভাবনাটা খুবই সুন্দর সূক্ষ্ম। তার কলমের ধার ছিল এবং গান খুব সুন্দর গোছাতে পারত। আবার অন্যদিকে মুন্সি ওয়াদুদের কাব্যবোধটা অনেক বেশি। শব্দচয়ন ভালো ছিল। আবার সংগীত পরিচালক গীতিকার কম্বিনেশনটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বলো মা কেন এত ক্লান্ত লাগে

এই গানটি গেয়েছিলেন আমার প্রিয় শিল্পী মান্না দে। কিন্তু উনি সহজেই এই গানটি করার সুযোগ আমাকে দেননি। পরিচালক-প্রডিউসার তাদের সিনেমার একটু বয়স্ক অভিনেতার জন্য গানের প্রয়োজন। আমি প্রথমে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কাছে টেলিফোন করলাম। কিন্তু তিনি অসুস্থ। পরে শ্যামল মিত্রের কাছে গেলাম। তিনি স্টেজ শো নিয়ে কলকাতার বাইরে চলে যাচ্ছেন। পরে অনুপ ঘোষালের কাছে গেলাম। কিন্তু তাও টাকা-পয়সার বিষয় নিয়ে বনল না। পরে হৈমন্তী শুক্লা যেহেতু আগে আমার গান গেয়েছেন সেহেতু তাঁর পরামর্শ চাইলাম। তিনি বললেন, ‘মান্না দা কলকাতায় এসেছেন। ওনার কাছে যেতে পারেন।’ তো টেলিফোন করলাম। কিন্তু যিনি ফোনটা ধরেছেন তিনি পাত্তাই দিচ্ছিলেন না। তখন বললাম ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি ... তারপর টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ করে দেন তিনি। কিন্তু মান্না দে ফাংশনে থাকায় ওনার ব্যস্ততার কথা বলে উড়িয়ে দিতে চাইলেন। আসলে উনি তো আমাকে চিনতেন না। আমার নামও জীবনে শুনেন নাই। আমি বললাম, ‘ছোটবেলা থেকে আপনার গান শুনে বড় হয়েছি, আপনার গানের খুব ভক্ত আমি, ভালোওবাসি, আপনাকে সম্মান করি প্লিজ আপনি আমার সিনেমায় একটা গান করে দেন।’ তিনি বললেন, ‘আরে মশাই! আপনি বোঝেন না কেন, আমার তো ঝামেলা আছে।’ তখন আমি বললাম, ‘আপনি মনে কিছু নিয়েন না আমি ওস্তাদ বাহাদুর খানের ছোট ভাই।’ তিনি বললেন, ‘আরে মশাই আগে বলবেন না। এখন তো ফাংশনে আছি। আপনি কালকে এমন সময় বাসায় চলে আসুন।’ আমি ঠিক টাইমে গেলাম। গিয়ে শুনলাম ভেতরে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আছেন। আমি বাইরে অপেক্ষায় থাকলাম। তারপর উনি চলে গেলে ভেতরে গেলাম। পাঞ্জাবি গায়ে একজন গুণ্ডার মতো সোফায় বসে আছেন মান্না দে। তারপর সব শুনে বললেন, ঠিক আছে। গানের কথার খুব সুনাম করলেন। বললেন, মায়ের ওপর গান তিনি করবেন। তখন সুযোগ বুঝে আমি বললাম, ‘আমি কি সুরটা শোনাবো? উনি সুর শুনে সঙ্গে সঙ্গে শর্ট হ্যান্ড করে রাখলেন। পরে একদিন পর ওনার গান রেকর্ড করতে গেলাম। কিন্তু গান শুনে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। দেখি গানটি তাঁর গলায় ঠিকমতো ওঠেনি। গলাতেও ডিস্টার্ব করছে বেশ। তখন বেশ বয়সও হয়ে গেছে। ১৯৮৬-৮৭ সাল হবে। গলায় শক্তিও অনেক কমে গেছে। তখন আমি ভয় পেয়ে বললাম, ‘চা খাবেন এক কাপ? মান্না দে বললেন, ‘আরে মশাই বুঝতে পেরেছি। গানটি আমাকে আরেকটু রপ্ত করতে দিন। গানটি শুনি আরেকটু’। তারপর যেটুকু গাইলেন সেটিই নিয়ে আসলাম। পরে হৈমন্তী শুক্লার সঙ্গেও আরেকটি ডুয়েট গান করাই। সিনেমার নাম ছিল ‘সুখের সন্ধানে’। যৌবনকাল হলে আরো ভালো গাইতে পারতেন হয়তো। কিন্তু আমি ওনাকে দিয়ে গান গাওয়াতে পেরেছি বলে নিজেকে ধন্য মনে করি।

বিবিধ

আমি আমার বন্ধু পরিচালক কাজী মোর্শেদের ‘ঘানি’ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাই। সে কিছুদিন আগে মারা গেছে। সে খুব ভালো একজন নির্মাতা ছিল। এটা আসলে গানের ছবি না। গান সিনেমাটিতে সিচ্যুয়েশনের জন্য ব্যবহার হয়েছিল। হিট করানো গান না। একটা সিচ্যুয়েশন এবং মানুষের আবেগপ্রবণ করার জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে গান করা। আরেকটা গান হলো শাম্মী আখতারের গাওয়া ‘ভালোবাসলে সবার সাথে ঘর বাঁধা যায় না’। এটা মাহফুজুর রহমান মাহফুজের লেখা। এই গানটির জন্য ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাই। যদিও তারও আগে আমার ‘মহানায়ক’, ‘ফেরারি বসন্ত’তে ভালো ভালো গান থাকা সত্ত্বেও কোনো স্বীকৃতি পাইনি। আসলে আমাকে সব সময় কাজ করতে হয়েছে এ্যাগেইন্সট দ্য উইন্ড। আমি বিপরীত বাতাসে কাজ করা লোক। কারণ আমার উল্টো দিকে যারা কাজ করছিল, তাদের অধিকাংশই কমার্শিয়াল কাজ করত। তারা কমার্শিয়াল ফিল্মও ভালো বোঝে, কমার্শিয়াল দৌড়াদৌড়িও আমার চেয়ে ভালো বোঝে। তারা খুব পপুলার হতে পেরেছে। কিন্তু আমার মানুষের সামনে পরিচিত হতে অনেক দেরি লেগেছে। আমি চলাফেরা, কাজকর্মেও লেভেল মেইনটেইন করেছি। সে জন্য একটা লেভেলে যেতেও কিছুটা সময় লেগেছে। যদিও তার জন্য আমি মোটেও দুঃখিত না। আনন্দের ব্যাপার এই যে, আমি একদম বাজারি হইনি। এই জন্য আমার স্রষ্টা, সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ভারতের হামলায় উচ্ছ্বসিত বলিউড, পাকিস্তানের তারকারা বলছেন ‘কাপুরুষতা’
  2. মেট গালায় শাহরুখকে চিনলেন না উপস্থাপক, কিং খান নিজেই দিলেন পরিচয়
  3. আমরা গান চুরি করেছি, গল্প চুরি করেছি : নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি
  4. বলিউডে সিন্ডিকেটের ইঙ্গিত করে কাঁদলেন বাবিল
  5. বিয়ের ৫ মাসেই বাবা হচ্ছেন নাগা চৈতন্য?
  6. মা হারালেন অনিল কাপুর
সর্বাধিক পঠিত

ভারতের হামলায় উচ্ছ্বসিত বলিউড, পাকিস্তানের তারকারা বলছেন ‘কাপুরুষতা’

মেট গালায় শাহরুখকে চিনলেন না উপস্থাপক, কিং খান নিজেই দিলেন পরিচয়

আমরা গান চুরি করেছি, গল্প চুরি করেছি : নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি

বলিউডে সিন্ডিকেটের ইঙ্গিত করে কাঁদলেন বাবিল

বিয়ের ৫ মাসেই বাবা হচ্ছেন নাগা চৈতন্য?

ভিডিও
ফাউল জামাই : পর্ব ৮৮
ফাউল জামাই : পর্ব ৮৮
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৪
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৪ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৪ (সরাসরি)
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৮
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৮
নাটক : চায়ের দোকানদার
নাটক : চায়ের দোকানদার
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৪
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৪
আলোকপাত : পর্ব ৭৭২
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ০২
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ০২
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৪৮
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৪৮

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x