শাকিব ও চলচ্চিত্র পরিবারের দ্বন্দ্ব নিরসনের পথে
ঢাকাই চলচ্চিত্রে নায়ক শাকিব খানকে নিয়ে সংকট নিরসনের পথে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিসহ চলচ্চিত্র পরিবারের পক্ষ থেকে এত দিন যে শাকিবের ব্যাপারে বিধিনিষেধ ছিল, তা দূর হতে যাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার নায়ক ফারুকের বাসায় চলচ্চিত্র পরিবারের নেতৃবৃন্দ ও শাকিব খান এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেন। নায়করাজ রাজ্জাকের বড় ছেলে বাপ্পারাজের মধ্যস্থতায় এই বৈঠক হয়।
যৌথ প্রযোজনার ছবি দেশে মুক্তি দেওয়াকে কেন্দ্র করে যখন শিল্পী সমিতি ও শাকিব খান মুখোমুখি, তখন দুই পক্ষই একে অপরের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিভিন্ন কথায় ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে গতকাল স্বীকার করেছেন শাকিব খান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শাকিবের ব্যাপারে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চলচ্চিত্র পরিবারের পক্ষ থেকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন।
বদিউল আলম খোকন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গতকাল ফারুক সাহেবের বাসায় গিয়ে শাকিব নিজের ভুল স্বীকার করেছে। ফারুক সাহেবও বিষয়টি সাধারণভাবে নিয়েছেন। পুরো ঘটনার মধ্যস্থতা করেছেন নায়করাজের বড় ছেলে বাপ্পারাজ।’
মহাসচিব আরো জানান, তাঁরা এ বিষয়ে চলচ্চিত্র পরিবারের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন আজ বিএফডিসিতে, সেখানে এই বিষয়ে কথা হবে।
বৈঠকের পর শাকিব খানের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল বিভিন্ন চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট সমিতির ওপর, সেটা কি তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে খোকন বলেন, ‘আসলে শাকিব খানকে আমরা বয়কট করিনি। সে যেহেতু আমাদের অসহযোগিতা করছিল, তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তার কোনো ছবিতে আমরা চলচ্চিত্রের ১৮টি সংগঠন কেউ তাকে সহযোগিতা করব না। আমরা ১৮টি সংগঠন মিলে চলচ্চিত্র পরিবার আজ বসে এই বিষয়টি প্রত্যাহার করে নেব। আর ফারুক সাহেবকে নিয়ে শাকিব যে কথা বলেছিল, তা নিয়ে ফারুক সাহেবের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তিনি ছোট ভাইয়ের মতো শাকিবকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’
গতকাল নায়ক ফারুকের বাসায় খোকন ও শাকিব খান ছাড়া আরো ছিলেন চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন, কোরিওগ্রাফার মাসুম বাবুল, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, প্রযোজক আরশাদ আদনান, বাপ্পারাজ প্রমুখ।
গত ১৮ জুলাই প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চলচ্চিত্র পরিবার এফডিসিভিত্তিক সংগঠনগুলোকে শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়। এর পর অনিশ্চিত হয়ে পড়ে শাকিব খান-সংশ্লিষ্ট ছবিগুলোর ভবিষ্যৎ। তবে হাইকোর্টের বিচারপতি সালমান মাসুদ ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চ চলচ্চিত্র পরিবারের সেই বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা তিনটি ছবির ক্ষেত্রে তিন মাসের জন্য স্থগিত করার আদেশ দেন ২৪ জুলাই। তিনটি ছবি হলো ‘আমি নেতা হবো’, ‘কেউ কথা রাখে না’ ও ‘মামলা হামলা ঝামেলা’। এ তিনটি ছবিরই প্রযোজক শাপলা মিডিয়া।
বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ জুলাই শাপলা মিডিয়ার পক্ষে ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করেন। এরপর হাইকোর্ট ওই আদেশ দেন। তারপর চলতি মাসের ২ তারিখ ছবির শুটিং হলে ওমর সানী, মৌসুমীসহ ১১ শিল্পী ও কলাকুশলী নিষেধ অমান্য করে শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করেন।