কী ঘটেছিল সেখানে
অভিনেত্রী থেকে রাজনীতিবিদ। দুই ক্যারিয়ারেই সফল হেমা মালিনী হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি, এমন বিপর্যয় অপেক্ষা করতে যাচ্ছে তাঁর জন্য। বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে তাঁর শরীরে, ভেঙেছে নাকের হাড়।
গতকাল বৃহস্পতিবার আগ্রা থেকে জয়পুর যাওয়ার পথে দৌসা নামক স্থানে একটি মারুতি অল্টো গাড়ির সঙ্গে বেমক্কা বাড়ি লাগিয়ে বসে হেমার মার্সিডিজ। এই দুর্ঘটনায় নিহত হয় সোনম নামের চার বছরের একটি শিশু। প্রথমে খবরে এসেছিল, হেমা নাকি নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। পরে অবশ্য এই বিভ্রান্তি দূর হয় এবং জানা যায়, গাড়ি চালাচ্ছিলেন হেমার ড্রাইভার মহেশ ঠাকুর।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, অল্টো গাড়িতে ছিলেন মোট পাঁচজন। এর মধ্যে শিশু সোনম নিহত। বাকি চারজনও গুরুতর আহত হয়েছে। দুর্ঘটনার পরপরই হেমা মালিনীকে সেখান থেকে দ্রুত জয়পুরের ফরটিস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মথুরা থেকে জয়পুর যাচ্ছিলেন বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেত্রী হেমা মালিনী। ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশ রাজস্থানের মথুরা থেকেই গত বছর লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপির হয়ে জয়ী হন হেমা।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার হেমাকে বহনকারী মার্সিডিজ গাড়িটি আগ্রা-জয়পুর মহাসড়ক দিয়ে বেশ দ্রুতই যাচ্ছিল।
মহাসড়কে দৌসা এলাকায় হেমার মার্সিডিজের গাড়ির উল্টো দিক থেকে আসছিল অল্টো ব্র্যান্ডের একটা সাদামাটা হালকা গাড়ি। দৌসার কালেক্টর স্বরূপ পানোয়ার জানিয়েছেন, দুই নারী, দুজন শিশু আর একজন পুরুষ -এই পাঁচজনের একটি পরিবার অল্টোতে ছিল।
ঘড়িতে ঠিক ৮টা বেজে ৫০ মিনিট। হেমার দ্রুতগতির মার্সিডিজ আর সাধারণ একটা পরিবারের অল্টো গাড়ি মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কপালের দিকে আঘাত পান হেমা মালিনী। রাজস্থানের মন্ত্রী রাজপাল সিং শেখাওয়াত হাসপাতালে হেমার পাশেই ছিলেন। তিনি জানান, কপালে, চোখের ভুরুর ঠিক ওপরে কিছু অংশ কেটে গেছে হেমার। নাকেও হাড়ে আঘাত লেগেছে। কপালে ও নাকের অংশে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। ৬৬ বছর বয়স্ক হেমা মালিনীকে নাকে সেলাই নিতে হয়েছে কয়েকটি।
বিপরীত দিক থেকে আসা অল্টো গাড়িতে থাকা পাঁচজনের সবাই গুরুতর আহত হয়েছে। এঁদের মধ্যে সোনম নামে চার বছরের একটি শিশু মারা গেছে। দৌসার পুলিশ সুপার আনশুমান ভোমিয়া জানান, ‘সোনমের বাবা ও মা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
হেমার গাড়িচালক মহেশ ঠাকুর পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। কিন্তু তাতে পার পেয়ে যাচ্ছেন না তিনি। জোরে গাড়ি চালানোর অভিযোগে মহেশ ঠাকুরকে আটক করেছে পুলিশ। মহেশ দাবি করছেন, বিপরীত দিক থেকে আসা অল্টো গাড়িটিই কোনো নির্দেশনা ছাড়া আচমকা গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলে।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া বলেছেন, ‘দৌসা দুর্ঘটনার কারণে খুবই খারাপ লাগছে। আমি ঘটনার ভুক্তভোগীদের জন্য প্রার্থনা করি। আমাদের তরফ থেকে যত দ্রুত সম্ভব সাহায্যের চেষ্টা করা হচ্ছে।’ হেমা মালিনীর পরিবারের কাছের বন্ধু বিজয় পুনিয়া জানিয়েছেন, হেমা মালিনীর স্বামী ধর্মেন্দ্রসহ পরিবারের অন্যরাও দ্রুত জয়পুর আসছেন। এরই মধ্যে মায়ের কাছে এসে পৌঁছেছেন এশা দেওল।