‘কাজের জায়গায় সিনিয়র-জুনিয়র বলে কোনো শব্দ নেই’
নব্বই দশকে মঞ্চনাটকের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন নাজনীন হাসান চুমকি। এরপর টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। বর্তমানে নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাও করছেন। কাজের ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন চুমকি।
বর্তমানে কী কাজ করছেন?
নাজনীন হাসান চুমকি : বেশ কিছু ধারাবাহিক নাটকের শুটিং করছি। এ বছরের শুরুতে নতুন একটা কাজের অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। এনটিভির রান্না নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান রূপচাঁদা-দ্য ডেইলি স্টার সুপার শেফ ২০১৭-এর অ্যাক্টিং ডিরেক্টর হিসেবে আমি কাজ করেছি। প্রতিযোগীদের গ্রুমিংও করিয়েছিলাম। দারুণ ছিল সেই কাজের অভিজ্ঞতা।
আপনি নাটকও পরিচালনা করছেন। কখনো চলচ্চিত্র পরিচালনা করার ইচ্ছে আছে কী?
নাজনীন হাসান চুমকি : আপাতত চলচ্চিত্র নির্মাণ করার ইচ্ছে নেই। আমি কোনো কিছু করার আগে প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। কোনো প্রযোজক যদি আমাকে যোগ্য মনে করে চলচ্চিত্র পরিচালনা করার প্রস্তাব দেন, আমি তখন ভেবে দেখব। প্রতিটা কাজই আমি আত্মতৃপ্তি নিয়ে করি। কোনো কাজে আমি অতৃপ্তি খুঁজে পাইনি।
একজন অভিনয়শিল্পী ও পরিচালকের মধ্যে বড় পার্থক্য কী?
নাজনীন হাসান চুমকি : অভিনয়শিল্পীরা একটা শট দিয়ে এসি রুমে বসে বিশ্রাম করতে পারেন, কিন্তু পরিচালকের পক্ষে সেটা করা সম্ভব হয় না। একজন অভিনয়শিল্পীর পারিশ্রমিক কোনো পরিচালক আটকে রাখতে পারেন না, কিন্তু প্রযোজকরা টাকা-পয়সা নিয়ে পরিচালকদের সঙ্গে অনেক সময় সৎ থাকেন না। অভিনয় ও পরিচালনা, দুটো কাজই অনেক চ্যালেঞ্জিং। শিল্পীদের সবার মধ্যে সততা থাকা জরুরি।
এখনকার কাজের পরিবেশ কেমন? তরুণদের সঙ্গে কাজ করতে আপনার কেমন লাগছে?
নাজনীন হাসান চুমকি : আমি মনে করি, কাজের জায়গায় সিনিয়র-জুনিয়র বলে কোনো শব্দ নেই। সিনিয়র শিল্পীরা যেমন আমার সহশিল্পী, তেমনি জুনিয়ররাও। সব সহ-শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতে আমার ভালো লাগে। বহুদিন ধরে মিডিয়ায় কাজ করছি। পরিবেশ মানিয়ে নেওয়া ব্যাপারটাও নিজের কাছেই। এত বছরে একই ধরনের চরিত্রে বহুবার অভিনয় করতে হয়েছে। চ্যালেঞ্জটা ওখানেই যে একই ধরনের চরিত্রে নিজেকে ভিন্নভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারা। আমাদের দেশে বেশির ভাগ নাটকের গল্প একই রকম হয়। তাই অভিনয়, গেটআপ, ডায়লগ ডেলিভারিতেও বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। আমি যখন নিজের লেখা নাটকে অভিনয় কিংবা পরিচালনা করি, তখন অনেক সুবিধা পাই। তখন কষ্ট একটু কম হয়।
অনেকেই মনে করেন টেলিভিশনে নাটকের দর্শক কমেছে। আপনার কী অভিমত?
নাজনীন হাসান চুমকি : সবার এখন কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। ব্যস্ততার কারণে এখন অনেকে ইউটিউবে নাটক দেখছেন অথবা বিজ্ঞাপনের কোনো ঝামেলা নেই; এ জন্যও দেখছেন। তবে টেলিভিশনে নাটক দর্শক একেবারেই দেখছেন না, এটা মানতে আমি নারাজ। কিছু দর্শক অবশ্যই টেলিভিশনে নাটক নিয়মিত দেখেন। ঘরে সোফায় কিংবা বিছানায় শুয়ে টিভি দেখা আর গাড়িতে বসে ইউটিউবে নাটক দেখে বিনোদন নেওয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।