১৩ মাসে বিও হিসাব কমেছে আড়াই লাখ
পুঁজিবাজারে মন্দা ও শেয়ার লেনদেন কমার কারণে বেনিফিশিয়ারি ওনার (বিও) অ্যাকাউন্ট নবায়ন কমেছে। এতে গত ১৩ মাসে বিও অ্যাকাউন্ট বা হিসাব কমেছে আড়াই লাখের বেশি।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মোট সময়ে মোট বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩১ লাখ ৯৫ হাজার ৮৫২টি। তবে চলতি বছরের ২৮ জুলাই এ হিসাবের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ লাখ ৩৬ হাজার ২১৪টি। অর্থাৎ এ সময়ে বিও হিসাব কমেছে দুই লাখ ৫৯ হাজার ৬৩৮টি।
২০১৩ সালের ৩০ জুন বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৫টি। ২০১৪ সালের জুন শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫৩টি।
গত ২৮ জুলাইয়ের হিসাবে দেখা যায়, মোট বিও হিসাবধারীর মধ্যে পুরুষ হিসাবধারী ২১ লাখ ৩১ হাজার ৫৯১, নারী সাত লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৫ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিও হিসাবের সংখ্যা ১০ হাজার ৬২৮।
মোট বিও হিসাবের মধ্যে বাংলাদেশি ২৭ লাখ ৮৩ হাজার ৯০ জন, প্রবাসী এক লাখ ৪২ হাজার ৪৯৬ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিও হিসাবের সংখ্যা ১০ হাজার ৬২৮।
২০১০ সালে প্রতিটি বিও হিসাবের নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এর মধ্যে সিডিবিএল ১৫০ টাকা, হিসাব পরিচালনাকারী ব্রোকারেজ হাউস ১০০ টাকা, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তহবিলে ৫০ টাকা ও বিএসইসির মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ২০০ টাকা জমা হয়।
পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিও হিসাবরক্ষণ ফিসহ সিডিবিএলের অন্যান্য সেবার ফি কমানোর বিষয়ে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসইসির ৫৭৯তম কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এ লক্ষ্যে ডিপজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩-এর সিডিউল-৪ খসড়া সংশোধনীতে বিও হিসাবরক্ষণ ফি ও অন্যান্য ফি হ্রাসকরণ এবং নতুন ইন্সট্রুমেন্ট সংযোজনসহ ফি পুনর্বিন্যস্ত করে অনুমোদন করা হয়েছে। তবে নতুন এ বিধান এখনো কার্যকর হয়নি।
বিও হিসাব কমার কারণ হিসেবে দেখা গেছে, ২০১০ সালে পুঁজিবাজার ধসের পর শুধু আইপিও আবেদনের জন্য অনেক বিনিয়োগকারী বিও হিসাব খুলেছেন। আইপিও আবেদন করে ভালো মুনাফা করতে না পারলেও বছর শেষে ফি দিতে হচ্ছে, এমন হিসাবগুলো মূলত একটি নির্দিষ্ট সময়ে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিও হিসাবের সংখ্যা একদিকে বাড়লেও নবায়ন না করায় বছর শেষে হিসাবের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যেসব বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে নিয়মিত লেনদেন করছেন, তাঁদের হিসাব কমছে না।
বিও হিসাবের পরিমাণ কমার কারণ ব্যাখ্যায় স্কয়ার সিকিউরিটিজ ম্যানেজমেন্টের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘এটা মূলত বাজারের অবস্থার বহিঃপ্রকাশ। বাজারের স্থিতিশীলতা ও চাঙ্গা অবস্থা বিরাজ করলে বিও বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। বাজার ভালো হলে যেসব হিসাব স্থগিত আছে, সেগুলো সচল হবে। তখন নতুন হিসাব যোগ হবে। তবে এখন সেকেন্ডারির চেয়ে আইপিওতে বিনিয়োগের আগ্রহ বেশি। নতুন আইপিও বাড়লে বিও হিসাবের সংখ্যা বাড়বে।’
বিধান মতে, বিও হিসাব নবায়নের শেষ সময় ৩০ জুন। ব্রোকারেজ হাউসগুলো হিসাবধারীদের ২৫ জুন পর্যন্ত সময় দেয়। নির্ধারিত সময়ে নবায়ন না হলে ব্রোকারেজ হাউসগুলো সংশ্লিষ্ট বিও হিসাবগুলো বন্ধ ও স্থগিতের নির্দেশ দেয়। ব্রোকারেজ হাউস থেকে হিসাব বন্ধের তালিকা পাঠানো হয়। যেসব বিও হিসাবে শেয়ার আছে, সেসব হিসাবের লেনদেন বন্ধ করা হয়। বিও হিসাব নবায়ন ফি জমা দিলে জরিমানা ছাড়াই হিসাবধারীরা আবার লেনদেন করতে পারে।