‘শিল্প প্রতিষ্ঠায় করা হচ্ছে ল্যান্ড ব্যাংক’
শিল্প প্রতিষ্ঠায় ব্যবসায়ীদের চাহিদা পূরণে ল্যান্ড ব্যাংক স্থাপনের কাজ চলছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে ৫০ বছরের জমির চাহিদা বিবেচনায় রেখে এসব ল্যান্ড ব্যাংক করা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা গ্রুপকে প্রাক-যোগ্যতা লাইসেন্স প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেজা কার্যালয়ে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপকে দুটি বেসরকারি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) নির্মাণের প্রাক-যোগ্যতা লাইসেন্স প্রদান করা হয়। ‘বসুন্ধরা স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ ও ‘ইস্ট-ওয়েস্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ নামের ওই এসইজেড দুটি হবে ঢাকার কেরানীগঞ্জে।
এর মধ্যে বসুন্ধরা স্পেশাল ইকোনমিক জোনের প্রস্তাবিত আয়তন প্রায় ২২৩ একর আর ইস্ট-ওয়েস্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোনের আয়তন প্রায় ২১৯ একর। দুটির মোট আয়তন হবে ৪৪২ একর। এর মধ্যে ২৭৮ একর জমি কেনা আছে। বাকি ১৬৪ একর জমি কেনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
পবন চৌধুরী বলেন,‘২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করবে সরকার। বেজা এখন পর্যন্ত বসুন্ধরাসহ বেসরকারি খাতে ১০টি এসইজেডের প্রাক-যোগ্যতা লাইসেন্স দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে লাইসেন্সের শর্ত পূরণ হলে পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স দেওয়া হবে।’
বেজা চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘১৯৮০ সাল থেকে ৩৬ বছরে দেশের বিভিন্ন এলাকাতে আটটি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে এসব ইপিজেড থেকে সরকারের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এরফলে ২০১০ সালে সরকার আইন সংশোধন করে বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা তৈরির উদ্যোগ নেয়।’
পবন চৌধুরী আরো বলেন, ‘আমাদের দেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ একটি সমস্যা। বিভিন্ন সেবা নিতে এসে হয়রানির শিকার হন বিনিয়োগকারীরা।
এতে ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগকারী পিছিয়ে যান। এসব সমস্যার সমাধানে এখন ওয়ানস্টপ সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এর পরিধি আরো বাড়াতে আইনের খসড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি দুর্নীতি দূর এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়ক হবে। এছাড়া ভবন ও শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও নীতিমালা করা হচ্ছে। যা বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকায় শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।’
পবন চৌধুরী বলেন, ‘বেসরকারি বিনিয়োগে জায়গার সমস্যাই প্রধান। এর সমাধানে সরকার ল্যান্ড ব্যাংক সৃষ্টি করছে। এরমধ্যে মিরেরসরাই ও ফেনীতে ৩০ হাজার একর জমি উন্নয়ন করা হচ্ছে। আরো যোগ হবে। মহেশখালীতে ৩০ হাজার একর, সাবরাং এ সাড়ে ১১০০ একর জমির উন্নয়ন হচ্ছে। যার অগ্রগতি প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া সারা দেশের আরো ৮৭টি স্থানকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।’
বসুন্ধরা গ্রুপের প্রধান উপদেষ্টা মো. মাহবুব হায়দার খান বলেন, ‘দুটি এসইজেডে প্রায় ৪০ হাজার কর্মসংস্থান হবে। দুটি এসইজেডে তেল পরিশোধনাগার, গ্যাস সিলিন্ডার তৈরি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, সিরামিক, ওষুধ, চামড়া, জাহাজ, ইস্পাত, কাগজ, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের বিনিয়োগ আনা হবে। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শপিংমল, হোটেল, মহিলা হোস্টেল নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া বসুন্ধরার পাশাপাশি কোনো দেশীয় বা বিদেশি প্রতিষ্ঠান তাদের শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে পারবে।’
অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা (জনসংযোগ) লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুল ওয়াহেদ, বেজার নির্বাহী সদস্য ড. এমদাদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।