নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি প্রমাণ করেছে সরকারের সঙ্গে জনগণ নেই। আজ শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে রাজধানীতে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘নাগরিক অধিকার আন্দোলনের’ উদ্যোগে বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল এবং রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘মানুষ সরকারকে ভোট দেয়নি, এখনও দেয় না। এই যে উপজেলা নির্বাচন (প্রথম ধাপ) হয়ে গেল। দেখলেন তো, বাংলাদেশের ইতিহাসের উপজেলায় এত কম ভোট কখনো পড়ে নাই। এটা ভোটের সরকারি হিসাব, পত্র-পত্রিকায় লিখছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতা (সংসদে) করলেন, কোনো কিছু তোয়াক্কা করি না, জনগণ আমার সঙ্গে আছে। জনগণ মানে কী? ওবায়দুল কাদের আপনার সঙ্গে আছে। আর কেউ আছে আপনার সঙ্গে? আপনার দলের লোকও আপনার সঙ্গে নাই। যদি থাকত তাহলে ৭ জানুয়ারি ভোট দিতে যেত, উপজেলা নির্বাচনে তারা ভোট দিতে যেত।’

মান্না বলেন, ‘জিনিসের দাম সরকার কমাতে পারে না, বিদ্যুতের দাম কমাতে পারে না, বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ এখন একশ বিলিয়ন ডলারের বেশি, ওই ঋণের টাকায় শোক করবার জন্য আবার বিশেষভাবে অর্থনৈতিক কাউন্সিলের বৈঠক বসায়। আসলে সরকার কি আছে?’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘আমি বলছি, তিন মাস বিদেশ থেকে আমদানি করবার টাকা নেই সরকারের কাছে। মে মাস পার করবে? রিজার্ভ বাড়াতে পারবে? বিদেশ থেকে প্রবাসীরা টাকা পাঠাচ্ছে আমাদের দেশে। সেটা পাঠালেও সরকারের কাছে যাচ্ছে না। ওরা জানে সরকার একটা চোর, তারা ভিন্নভাবে টাকা পাঠায়। আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধির আর কোনো সুযোগ নাই, কেবল বিদেশিরা যদি আমাদের ডলার দেয়, কেবল এই দেশ বাঁচতে পারে, নইলে এদেশ বাঁচতে পারবে না।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যারা মনে করেন, বিরোধী দল দুর্বল হয়েছে, সরকার আরও শক্তিশালী হয়েছে তাদেরকে অর্থনৈতিক চিত্র দেখার জন্য বলি। বিরোধী দল দুর্বল হয়নি, আমরা আমাদের দলেই আছি।’ 

জনগণের উদ্দেশে মান্না বলেন, ‘আপনাদের কষ্ট যদি লাগব করতে চান, এই সরকারকে দিয়ে হবে না। ভোট কেড়ে নিয়েছে, জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, আপনার মাথায় ঋণের বোঝা বাড়িয়ে দিয়েছে। জনগণের কোনো কিছু করতে পারবে না তারা। এই সরকারের হটাতে হবে, ওদের সঙ্গে কোনো আপস নাই। গরম একটু একটু করে কমছে। গরম যত কমবে আমরা আরও বড় আকারে রাস্তায় আসব। এ রকম চিন্তা করছি, দেখি শেষ পর্যন্ত কী হয়?’

অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছে, তিনি ভীষণ অসুস্থ। চিকিৎসা পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’

মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আসলে সরকার আইনের দোহাই দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা পথ রুদ্ধ করে রেখেছে। আইনমন্ত্রীকে বলব, জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না। তাকে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা নিন। নইলে আপনাদের এই প্রতিহিংসার জবাব জনগণই একদিন দেবে।’

সংগঠনের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মাওলানা শাহ নেছারুল হক ও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলসহ অন্যান্যরা বক্তব্য দেন।