প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী নিয়োগ প্রশ্নে হাইকোর্টের রায় ১৪ জানুয়ারি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০-এ ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে ২৮৫ প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া প্রশ্নে রুল জারি হয়। সেই রুলের ওপর শুনানি শেষে ১৪ জানুয়ারি রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়েছে। চারটি পৃথক রিটে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনতাসীর উদ্দিন আহমেদ।
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া রায় ঘোষণার দিন ধার্যের বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, ২৮৫ প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া বিষয়ে আনা মামলা কোনরূপ ফি ছাড়াই পরিচালনা করছেন তিনি।
রিট আবেদনকারীরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকাশিত ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। পরে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন।
অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়, যেখানে কোনো প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। অথচ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯-এর ৮ এর ২ বিধিতে বলা হয়েছে, ‘উপ-বিধি (২) এর দফা (গ)-তে উল্লেখিত মহিলা, পোষ্য ও পুরুষ কোটা পূরণের ক্ষেত্রে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো বিধি বা সরকারি সিদ্ধান্তে কোনো বিশেষ শ্রেণির কোটা নির্ধারিত থাকলে ওই কোটা সংক্রান্ত বিধান অনুযায়ী নিয়োগ করতে হবে।’ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩-এর ধারা ৩৫ এর ১ এ বলা হয়েছে, ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও প্রতিবন্ধিতার ধরণ অনুযায়ী, উপযোগী কোনো কর্মে নিযুক্ত হতে কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তার প্রতি বৈষম্য করা বা তাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।
এ কারণে ২৮৫ প্রার্থী হাইকোর্টে পৃথক চারটি রিট করেন। সেসব রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট চলতি বছরের শুরুতে রুল জারি করেন। রুলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০-এ প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়া কেন অবৈধ হবে না এবং ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালেয় সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি আজ শেষ হয়েছে।