জনগণের জানমাল রক্ষায় আনসার সদস্যদের সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (ভিডিপি) জাতীয় সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।

গাজীপুরের শফিপুরে বাংলাদেশ আনসার একাডেমিতে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী জাতির প্রয়োজনে সবসময় সাহসিকতা দেখানোয় আনসার সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহাসড়কে নাশকতা ঠেকাতে আনসার বাহিনীর ভূমিকা প্রশংসিত। কারণ তাঁরা তখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার করেছিলেন। সাম্প্রতিক যেসব নির্বাচন হচ্ছে, যেমন পৌর নির্বাচন, মেয়র নির্বাচন হয়েছে সেখানেও আনসার বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই কার্যক্রম পরিচালনায় আমরা যেসব আনসার ভিডিপির সদস্যকে হারিয়েছি তাদের পরিবারবর্গকে আমি গভীর সহমর্মিতা এ সমবেদনা জানাচ্ছি।’  

আনসার সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের জানমাল হেফাজত করা আপনাদের পবিত্র দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে আপনারা সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও সাহসের সঙ্গে কাজ করে যাবেন।’

আনসার বাহিনীর উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫টি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে আধুনিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টার ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আনসার সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ এসব কার্যক্রমের ফলে বাহিনীর দক্ষতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

গত এক বছরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বিশেষ অবদান রাখায় ৭৯ জন আনসার সদস্যকে বাংলাদেশ আনসার পদক (সাহসিকতা ও সেবা), প্রেসিডেন্ট আনসার পদক (সাহসিকতা ও সেবা), বাংলাদেশ গ্রাম প্রতিরক্ষা দল পদক (সাহসিকতা ও সেবা) এবং প্রেসিডেন্ট গ্রাম প্রতিরক্ষা দল পদক (সেবা) তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে সমাবেশে পৌঁছানোর পর কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী সমবেত কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। আনসারের বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে গঠিত কুচকাওয়াজ মার্চ পাস্টের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানায়। এবারের কুচকাওয়াজে ছয় শতাধিক আনসার-ভিডিপি অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া দরবারসহ বিভিন্ন পর্বে আড়াই হাজার আনসার-ভিডিপি সদস্য যোগ দেন। সমাবেশ উপলক্ষে পুরো একাডেমিকে বর্ণিল সাজে সুসজ্জিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা।

সারা দেশে ১৮ হাজার ব্যাটালিয়ন আনসার, তিন লাখ অঙ্গীভূত আনসার ও ৫৯ লাখ গ্রাম প্রতিরক্ষা দলের ভিডিপি সদস্য রয়েছে। এই তিন লাখ অঙ্গীভূত আনসার থেকে ৪৫ হাজার আনসার সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত। বাকিরা সরকারি প্রয়োজনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য হিসেবে কাজ করে থাকেন।