‘ওদের না খাইয়ে রাখা হয়েছে, নির্যাতন করছে’
‘আমার ভাই তো অনেকদিন ধরে ট্রেকিং করত। এ ছাড়া বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজেও সে ওখানে যেত। তাই ওখানে ওর অনেক পরিচিত লোকজন ছিল। তারাই আমাদের জানিয়েছে, অপহৃতদের না খাইয়ে রাখা হয়েছে। অপহরণকারীরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ওপর প্রতিশোধ নিতে এই অপরহণ করেছে বলেও আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়া এ বিষয়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাচ্ছি।’
রাঙামাটি-ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চল সিদ্ধুপাড়া থেকে অপহৃত পর্যটক জোবায়েরের মামাতো ভাই নাওয়াত আশেকিন অভি এনটিভি অনলাইনকে এ কথা বলেন।
গত রোববার বেলা আড়াইটার সময় রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার বড়তলী ইউনিয়নের সিদ্ধুপাড়া থেকে অস্ত্রের মুখে মোহাম্মদ মুন্না ও গাইড প্রাচিংহাই ম্রোর সঙ্গে জোবায়েরও অপহৃত হন। রাঙামাটির বড়তলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতমং মারমা স্থানীয় দুই যুবকের বরাত দিয়ে এ অপহরণের কথা জানান। তিনি আরো জানান, বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপের সদস্যরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
অভি বলেন, ‘স্থানীয় অধিবাসীরা আমাদের অনেক তথ্য দিয়েছে। তারা জানিয়েছে যে অপহৃতদের ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তের ভেতরে বা নো ম্যানস ল্যান্ডের কোথাও রাখা হয়েছে।’
অভি আরো জানান, অপহৃতদের খেতে এবং ঘুমাতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া অপহৃতদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত অপহরণকারীদের ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে কোনো মুক্তিপণ বা দাবি জানানো হয়নি। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, পার্বত্য অঞ্চলে বাস করা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরেই গাইডসহ তিন পর্যটককে অপহরণ করা হতে পারে।
অভি জানান, ফিন্যান্স বিষয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন জোবায়ের। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেন। জোবায়ের এনগ্যাগ করপোরেশন ও আরাহান টেক নামের দুই প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা। তাঁর বাবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক। গতকাল সোমবার জুবায়েরের বাবা ও মা সৌদি আরবে হজ শেষ করে দেশে ফিরেছেন।
পিএইচডি করতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে শেষবারের মতো কেওকারাডংয়ে ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলেন জোবায়ের। এজন্য বান্দরবানের থানচিতে যাত্রাবিরতি দেন তিনি।
এদিকে জোবায়েরকে অপহরণের ঘটনায় রাজধানীর মিরপুর থানায় তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান অভি।