ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের ধারণা থেকে বিশ্বকে বেরোতে হবে
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বিশ্বকে অবশ্যই ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে তিনি ধর্মের অপব্যাখ্যা সম্পর্কে সবাইকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ শুক্রবার বিকেলে দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীর বনানী পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। সেখানে তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহানবমীর অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে আগে জাতিতে জাতিতে বহু সংঘাত-যুদ্ধ হয়েছে। ধর্মের নামে মনুষ্যত্ব, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতা ভুলুণ্ঠিত হয়েছে। একটি অশুভ মহল ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই কোনো ধর্ম নয়, বরং ধর্মনিরপেক্ষতাই হবে একটি জাতি ও দেশ গঠনের ভিত্তি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কোনো একক ধর্ম নয়, বরং সকল ধর্মের অনুসারীদের নিয়ে গড়ে তুলতে হবে ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সৌহার্দ্যময় সমাজ ও রাষ্ট্র। যেখানে সকল ধর্মের লোক পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমতসহিষ্ণুতা, উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। তিনি বলেন, ধর্মীয় উৎসব উদযাপনে ভিন্নতা থাকবে, তবে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের অনুসারীদের চেতনা ও মূল সুর একই। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সব ধর্মের লোক নিজ নিজ ধর্ম পালন করে আসছে।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অজর্ন করেছি। আমাদের প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে, একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। বাংলাদেশের প্রতিটি ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে পালন করছে।’
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ যাতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সুফল ভোগ করতে পারে এবং বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাস চন্দ্র ঘোষ এবং সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু কুমার দাস রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন।