তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ‘ধর্ষণ’, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর মামলা
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসাছাত্রী (১০) এখন অন্তঃসত্ত্বা। দুই মাস আগে সোয়েটার কারখানার এক শ্রমিক তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রভাবশালীদের নানা হুমকির একপর্যায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে থানায় এসে ওই ছাত্রীর পরিবার শ্রীপুর মডেল থানায় মামলা করে।
এ ঘটনায় তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামের এক সন্তানের জনক আমান উল্লাহকে (২৬) আসামি করা হয়েছে। তিনি মুলাইদ গ্রামের নাভিদ সোয়েটার কারখানার শ্রমিক। আমান উল্লাহ ওই মাদ্রাসাছাত্রীর দূরসম্পর্কের মামা হয়।
ধর্ষণের শিকার ছাত্রী ও তার স্বজনরা জানায়, মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে আমান উল্লাহ প্রায়ই ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতেন। তিনি ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করলে তাকে মেরে গুম করে ফেলার হুমকি দেন। হুমকির পর ওই ছাত্রী দুই মাস ধরে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেয়। সম্প্রতি ছাত্রীর শারীরিক গঠনের পরিবর্তন ঘটলে সে তার মায়ের কাছে ঘটনা খুলে বলে। পরে তার বাবা-মা অভিযুক্ত আমান উল্লাহর পরিবারের কাছে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। কিন্তু আমান উল্লাহর পরিবার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ছাত্রীর পরিবারকে হুমকি দেয় ও নানা ভয়ভীতি দেখায়। এরপর ছাত্রীর রিকশাচালক বাবা ঘটনাটি স্থানীয় মাতবরদের জানালে তাঁরা থানায় অভিযোগ না করার হুমকি দিয়ে আপসের কথা বলে নানা কৌশলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। প্রভাবশালীদের নানা হুমকির একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে শ্রীপুর মডেল থানায় এসে ছাত্রীর পরিবার আমান উল্লাহকে আসামি করে মামলা করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আমান উল্লাহর মা জানান, এ ঘটনা তাঁরা শুনেছেন। কিন্তু আমান উল্লাহ তাঁদের কাছে ধর্ষণের ঘটনা অস্বীকার করেছেন। আমান উল্লাহ বেশ কয়েকদিন ধরে বাড়িতে নেই বলে দাবি করেন তিনি।
তেলিহাটি ইউনিয়ন ওলামা দলের সভাপতি ও স্থানীয় মাতবর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এ ব্যাপারে বলেন, ‘মেয়েটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাই ওর পরিবারকে থানায় যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি সামাজিকভাবে বসে মীমাংসার চেষ্টা করছি।’
শ্রীপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এখলাস উদ্দিন জানান, ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকলে আপসের কোনো সুযোগ নেই।