‘আরিফকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা হয়েছে’
মুন্সীগঞ্জে নয় মামলার আসামি সাইফুল ইসলাম আরিফকে (৩৫) পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর স্ত্রী সাবিনা আক্তার রুনু।
আজ সোমবার মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সাবিনা আক্তার।
সোমবার মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তাপুর মালিপাথর এলাকায় এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। গণপিটুনির শিকার ওই ব্যক্তির নাম সাইফুল ইসলাম আরিফ। তিনি মুক্তারপুর মিরেশ্বর কালীখোলা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ জানিয়েছে, আরিফের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একাধিক মাদক, অস্ত্র, পুলিশের ওপর হামলাসহ নয়টি মামলা রয়েছে। আরিফ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সংবাদ সম্মেলনে সাবিনা আক্তার রুনু বলেন, ‘আমার স্বামী এখনো মাদকসেবী। কিছুদিন আগে র্যাব আটক করার আগেও সে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। আদালতে জামিনে বের হওয়ার পর তিনি আর এই মাদক বিক্রির সাথে জড়ান না। সাতদিন আগেও আমার বাসায় সদর থানা পুলিশের একটি অভিযান চালালেও কোনো মাদক পায়নি। ঘটনার দিন রাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই ফারুকের সাথে মাদক সেবন করে। ভোর রাতে তারা কম টাকায় জাল কিনবে বলে বাসা থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে বের হয়। সকালে মোবাইলে আত্মীয়র কাছ থেকে জানতে পারি, আরিফকে মারধর করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়েছে।’
সাবিনা আক্তার বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল ইমরান মেম্বারের বাড়ির সামনে গেলে বাঁধা অবস্থায় আমার স্বামীকে পাই। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার ম্যানেজার আমির, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ইমরান, রাসেল, সেলিম আমার স্বামীকে মারধর করতে থাকে। আমি তাদের একাধিকবার নিষেধ এবং আবেদন জানালেও তারা মারধর করতে থাকে। এ ছাড়া আমার সাথে মামা আনিস আটকাতে গেলে তাকেও মারধর করে। একপর্যায়ে পা, মাথা এবং কান দিয়ে অনবরত রক্ত বের হতে থাকে। অটোরিকশা দিয়ে আমি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গাড়ি উল্টিয়ে দেয় এবং আরিফকে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়।’
সাবিনা আক্তারা বলেন, ‘আমি পুলিশকে ফোন দেই এবং আমির আমার কথা শুনতে পেরে বলে, একটি মেশিন (অস্ত্র) সাথে দিয়ে দিতে। এ ছাড়া আরিফের সাথে যেই অস্ত্রটি পাওয়া গেছে তা ভাঙা, ডাকাতি করতে গিয়ে কেউ কি ভাঙা অস্ত্র নিয়ে বের হয় এবং আমার স্বামীর হাতে গুলি কীভাবে পাওয়া গেল?’
সাবিনা আরো বলেন, ‘আমার স্বামীকে মারধর করার পেছনে স্থানীয় রাজনীতি এবং কারেন্ট জালের মেশিন প্রতি চাঁদা তোলার বিষয় জড়িত। আমরা যে এলাকায় আছি, আরিফের জন্য কারেন্ট জাল কারখানাগুলো থেকে কেউ টাকা তুলতে পারত না।’
যোগাযোগ করা হলে মো. আমির বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। ১৫ দিন আগে আমার একটি মোটরসাইকেল চুরি করে আরিফ। আমি পুলিশ দিয়ে আরিফকে ধরার চেষ্টা করায় আমার প্রতি ক্ষিপ্ত। ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না এবং কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানা নেই।’