‘গ্রেনেডটা ট্রাকের ডালায় লেগে বাইরে পড়ে’
‘গ্রেনেডটা ট্রাকের ডালার কোণায় লেগে ভেতরে না পড়ে বাইরে পড়ে। যদি ভেতরে পড়ত তাহলে আমরা ওই ট্রাকে যারা ছিলাম তারা কেউই বাঁচতে পারতাম না।’
আজ সোমবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার ১৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।
সভায় ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঘটা গ্রেনেড হামলার স্মৃতিচারণা করেন শেখ হাসিনা। তুলে ধরেন তাঁর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন দাঁড়াই মঞ্চে, ওখানে একটা টেবিল দেওয়া ছিল। ঠিক মঞ্চের কোণায় দাঁড়ান তিনি (সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ হানিফ)। আমি বললাম আপনি ওখানে দাঁড়াচ্ছেন আমি তো সবাইকে দেখতে পাচ্ছি না। (হানিফ) বললেন, না কখন কী হয়, আপনি কথা বলবেন না, আপনি বক্তৃতা দেন। গ্রেনেডটা ট্রাকের ডালার কোণায় লেগে ভেতরে না পড়ে বাইরে পড়ে। যদি ভেতরে পড়ত তাহলে আমরা ওই ট্রাকে যারা ছিলাম তারা কেউই বাঁচতে পারতাম না। কিন্তু বাইরে পড়ে পুরো স্প্লিন্টারটা হানিফ ভাইয়ের মাথায় এসে লাগে। তাঁর মাথা থেকে রক্ত আমার পুরো কাপড়ে পড়তে থাকে। যার ফলে অনেকে ভেবেছিল আমি আহত হয়েছি। আল্লাহর ইচ্ছা, আমার নেতাকর্মী সবাই মিলে মানববর্ম করে আমাকে রক্ষা করেছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেদিন আমরা ২২ জন নেতাকর্মীকে হারিয়েছি। আমরা চেষ্টা করেছি যারা বেঁচে আছে তাদের সহায়তা করতে। সরকার কিন্তু নির্লিপ্ত।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের অনেক সংসদ সদস্য আহত। পার্লামেন্টে এটা নিয়ে আমরা কথা বলতে চাইলাম। বিএনপি আমাদের তা করতে দেয়নি।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আয়োজিত আওয়ামী লীগের সভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা অল্পের জন্য বেঁচে যান। তবে ওই হামলায় নিহত হন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ দলের ২৪ জন নেতাকর্মী। ওই হামলায় চারশতাধিক মানুষ আহত হয়। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছে।