বেওয়ারিশ কুকুর হত্যা বন্ধের আহ্বান
সারা দেশে সিটি করপোরেশনে জলাতঙ্কে আক্রান্ত ও বেওয়ারিশ কুকুর না মেরে মানবিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সম্প্রতি যশোর, চট্টগ্রাম ও ফেনীতে বেওয়ারিশ কুকুর নিধনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মায়া বারোলো রিজভী এই আহ্বান জানান।
আজ রোববার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
‘নির্বিচারে কুকুর নিধন জলাতঙ্কের প্রতিকার নয়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক বেনজির আহমেদ। আরো উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান পিএডব্লিউ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রকিবুল হক এমিল, পিএডব্লিউয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজিনা এলিয়া আহমেদ। অনুষ্ঠানে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন মায়া বারোলো রিজভী।
অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, সম্প্রতি জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকারের জন্য বেওয়ারিশ কুকুর নির্বিচারে মেরে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে জলাতঙ্কের সংক্রমণ আরো বেড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সবচেয়ে উপযোগী ব্যবস্থা হচ্ছে কুকুরদের টিকা দিয়ে বন্ধ্যা করা। ফলে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত হবে এবং কুকুরের কামড় দেওয়া কমে যাবে। কুকুর মারা হলে পরিবেশের ভারসাম্য অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে।
২০১৪ সালের পরিচালিত হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের (এইচএসআই) জরিপ মতে, জনসংখ্যা অনুপাতে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম কুকুর রয়েছে। কুকুর আরো কমিয়ে আনার জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় বন্ধ্যা করে। যা হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ২০১২ থেকে কুকুর ব্যবস্থাপনা প্রোগ্রামের মাধ্যমে করে আসছে। গত এক বছর এইচএসআই ক্লিনিক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রায় চার হাজার কুকুরকে বন্ধ্যা করে টিকা দিয়েছে। যা মানবদেহে জলাতঙ্ক সংক্রমণ প্রতিরোধের ব্যয়ের প্রায় ৩০ গুণ কম। ২০২১ সালের মধ্যে জলাতঙ্ক নির্মূল করে বিশ্বকে এ আতঙ্ক থেকে মুক্ত করা সম্ভব।
কুকুর নিধন অমানবিক বিবেচনা করে আদালতের নির্দেশে ২০১২ সাল থেকে ঢাকা শহরে কুকুর নিধন বন্ধ রয়েছে।