নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় মির্জা ফখরুলের নিন্দা
সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার বিএনপির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা মহানগর পল্টন থানা শাখা যুবদলের সভাপতি আসিফ ওমর ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক খলিল মৃধা ও সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়ন হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কাফরুল থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ বাবুল, সিনিয়র সহসভাপতি মো. আবু হানিফ, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি দিদার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সোহেল ও শাহীনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১৫ আগস্ট স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর উত্তর কাফরুল থানার নেতাকর্মীরা রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভায় অংশ নেওয়ার সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর এই নেতাকর্মীদের কাছ থেকে ২২০টি পেট্রলবোমা পাওয়ার অজুহাতে গেছে বলে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি আরো জানান আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের পর এই নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মরহুম নুরুল হুদার বড় ছেলে তানভীর হুদার গাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। চাঁদপুরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় আদালতে হাজিরা শেষে বিএনপির সদস্য পদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে মতলব দক্ষিণ বাইপাস রাস্তার ওপর এ হামলা হয়। এ ছাড়া বিএনপির সদস্য ফরম সংগ্রহের সময় সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মো. আনারুল ইসলাম আঙ্গুরের হাত ভেঙে দিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা।’
বিবৃবিতে জানানো হয়, ‘আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ৩০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে আহত করে ও তাঁদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১১ নম্বর মগাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে সদস্য পদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের সভায় এ হামলা হয়। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন মিরসরাই উপজেলা বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন সেলিম চেয়ারম্যান, নুরুল আবছার চেয়ারম্যান, মগাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, সামছুদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ফেরদৌস, ডা. সোলেমান, মগাদিয়া ইউনিয়ন জাসাস নেতা আবুল কাশেম, ওলামা দল নেতা মাওলানা জমির উদ্দিন, যুবদল নেতা মো. বাবুল, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. ইসমাইল, মো. ফারুক, ছাত্রদল নেতা নাজিমউদ্দিন, কাটাচরা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. দিদারুল আলমসহ ৩০ জন। বিএনপি নেতা মো. আলাউদ্দিন, মো. দিদারুল আলম, সামছুদ্দিন চৌধুরী, যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম এবং মো. ইসমাইল হোসেনকে আহত অবস্থায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।’
বিবৃবিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপিসহ বিরোধী দল দমনে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী এখন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সারা দেশে বিএনপির যেকোনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছাড়াও চলমান সদস্য পদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহের শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানে পুলিশ ও আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের সফলতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে সরকার সারা দেশে দলের নেতাকর্মীদের ওপর সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন শুরু করেছে। সাধারণ মানুষও এখন জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সারা দেশই যেন এখন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের লাগামহীন দৌরাত্ম্য, বেপরোয়া খুন, নারী ও শিশু ধর্ষণের অভয়ারণ্য।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরো বলেন, ‘আমি সারা দেশে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।’