লেখা চুরি করে পাঠ্যপুস্তক!
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে নকল বই পড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আদর্শর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তাঁদের প্রকাশিত মাকসুদুর রহমান মার্টিনের লেখা ‘সহজ ভাষায় পাইথন ৩’ বইটি নকল করে প্রকাশিত একটি বই পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে পাঠ্য হিসেবে পড়ানো হচ্ছে।
২০১৭ সালের বইমেলায় আদর্শ প্রকাশিত ‘সহজ ভাষায় পাইথন ৩’ বইটি ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি। নতুন প্রজন্মের যেসব শিক্ষার্থী প্রোগ্রামিং শিখে নিজেদের সামর্থ্যের কথা বিশ্বকে জানান দিতে চায় তাদের জন্য লেখা হয় বইটি।
এদিকে গত ১ আগস্ট হক পাবলিকেশনস থেকে ‘প্রোগ্রামিং এসেনশিয়ালস’ নামে একটি বই প্রকাশ হয়, যার ১২টি অধ্যায়ের মধ্যে ৬টিই অধ্যায়ই ‘সহজ ভাষায় পাইথন ৩’-এর নকল বলে দাবি করেন মাকসুদুর রহমান মার্টিন। তিনি বলেন, ‘আতংকের বিষয় হচ্ছে নকলকৃত এই বইটি পলিটেকনিকে পাঠ্য হিসেবে পড়ানো হচ্ছে! এতে আমাদের নাজুক শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে।’
প্রোগ্রামিং এসেনশিয়ালস বইয়ের লেখক একজন শিক্ষক। বইয়ে দেওয়া পরিচিতি অনুযায়ী তাঁর নাম প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহবুব আলম। তিনি কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টটিউটের ইনস্ট্রাক্টর।
মাহবুব আলম কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের প্রভাবশালী ব্যক্তি উল্লেখ করে সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের এই বইটি পড়তে বাধ্য করছেন বলেও জানান মার্টিন।
মাকসুদুর রহমান মার্টিন জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি মাহবুব আলমের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। সেই সময় মাহবুব আলম একটি মাত্র পৃষ্ঠা নকল বা কপি করা হয়েছে বলে জানিয়ে তাঁর জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু পুরো বইটি পড়ে মার্টিন বুঝতে পারেন যে ১২ অধ্যায়ের বইয়ের ছয় অধ্যায়েই 'সহজ ভাষায় পাইথন ৩'-এর সুস্পষ্ট প্রভাব বিদ্যমান। স্ট্রিং, অপারেটর ও ফাংশন চ্যাপ্টারে রয়েছে হুবহু নকলের প্রমাণ।
এ বিষয়ে জানতে প্রকৌশলী মাহবুব আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় মাহবুব আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘উনার (মাসকুদুর রহমান মার্টিন) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, এটা নিয়ে উনার সঙ্গেই কথা বলব। আর কারো সাথে বলব না।’
বই দুইটি মিলিয়ে দেখা যায়, প্রোগ্রামিং এসেনশিয়ালস বইয়ের বহু লেখা সহজ ভাষায় পাইথন ৩ বইয়ের সঙ্গে মিলে যায়। এমনকি মাকসুদুর রহমানের নিজের লেখা কিছু সংখ্যার ক্রমও ওই বইটিতে হুবহু ছেপে দেওয়া হয়েছে।