সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা
সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন এক নারী।
গতকাল বুধবার রাজধানীর পল্টন থানায় মামলাটি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুল হক এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
ওসি জানান, ঘটনার শিকার ওই নারী নিজেই মামলার বাদী। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি নেওয়া হয়েছে। মামলার একমাত্র আসামি আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ আজাদ (৪৮)।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী নারীর বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইয়ে। বর্তমানে তিনি স্বামীর সঙ্গে মিরপুরে থাকেন। তিনি এলএলএম পাস করে সাত মাস আগে পল্টন এলাকার বিজয়নগরে বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অংশ নিতে কোচিংয়ে ভর্তি হন। সেখানে যথারীতি ক্লাস করে আসছিলেন। গত ১৮ জুলাই (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে কোচিংয়ের বিদায় অনুষ্ঠান হয়। এতে তাঁর ব্যাচের ছাত্রছাত্রীরা ছাড়াও অন্য ব্যাচের ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁদের শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ আজাদ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে তিনি সব ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে ছবি তোলেন। অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে যখন ওই নারী চলে যেতে চান, তখন শেখ আজাদ তাঁকে বসতে বলেন। এরপর তিনি শেখ আজাদের চেম্বারের পাসের ক্লাসরুমে বসেন। প্রায় ১০ মিনিট অপেক্ষা করে তিনি আবার শেখ আজাদের কাছে বিদায় নিতে যান এবং এ সময় তিনি তাঁকে অনেকটা ধমক দিয়ে বসতে বলেন। সে সময় বেশ কয়েকজন তাঁর কক্ষে ছিল বিভিন্ন কাজের জন্য। তিনি সবাইকে একেক করে বিদায় দেন। সবাই চলে যাওয়ার পর শেখ আজাদ ওই নারীকে বলেন, ‘তুমি কি তোমার পরীক্ষার হল চিনো?’ তিনি না চিনলেও তাঁর স্বামী চেনেন বলে জানান ওই নারী। এরপর শেখ আজাদ তাঁর বুকশেল্ফ থেকে একটি বই নিয়ে আসতে বলেন তাঁকে। তাঁর কথামতো তিনি বইটি এনে দেন। এরপর ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে শেখ মো. আজাদ ঘর থেকে বের হয়ে যান। এ সময় ওই নারীও ঘর থেকে বের হওয়ার সময় আজাদ পুনরায় প্রবেশ করে তাঁকে জড়িয়ে ধরেন এবং স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এ সময় আজাদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষার সময় একটি চেয়ারের ওপর তিনি পড়ে যান। এরপর দ্রুত দরজা খুলে বের হয়ে তাঁর বাসায় চলে যান ওই নারী।
মামলার এজাহারে আরো বলা হয়েছে, এই ঘটনার পরদিন ১৯ জুলাই (গতকাল বুধবার) বেলা ১১টার দিকে শেখ মোহাম্মদ আজাদ তাঁর মোবাইল ফোন থেকে ওই নারীকে ফোন করেন এবং গতকালের বিষয়টি ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা চান। এরপর ওই নারী তাঁর স্বামীসহ অন্য আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে পল্টন থানায় মামলা করেন।
এই বিষয়ে মামলার বাদীর স্বামী আজ বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে জানান, তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু এবং সঠিক বিচার চান। আর আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।