স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রী প্রেমিকের যাবজ্জীবন
সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলায় জাকির হোসেন মুকুলকে হত্যার দায়ে তাঁর স্ত্রী জেসমিন সুলতানা ও স্ত্রীর প্রেমিক মনিরুজ্জামান মুকুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে জেসমিন সুলতানাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড এবং মুকুলকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
আজ বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবদুল হামিদ এই রায় দেন। এ সময় দণ্ডাদেশ পাওয়া দুই আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
আসামি মুকুলের বাড়ি শ্যামনগর উপজেলার ধাপুয়ার চক গ্রামে। তিনি পরানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বন্ধুত্বের সূত্র ধরে শ্যামনগর উপজেলার গৌরীপুর গ্রামের মৎস্যঘের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন মুকুলের বাড়িতে যাতায়াত ছিল শিক্ষক মনিরুজ্জামান মুকুলের। এর একপর্যায়ে জাকিরের স্ত্রী জেসমিন সুলতানা ও তাঁদের সন্তানকে চিকিৎসার নাম করে ঢাকায় নিয়ে যান মনিরুজ্জামান মুকুল। এভাবে তাঁদের মধ্যে পরকীয়া গড়ে ওঠে। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় জেসমিনের স্বামী জাকির হোসেন। পরে মুকুল জাকিরকে সরানোর চেষ্টা করতে থাকেন।
মামলায় আরো বলা হয়েছে, ২০০৭ সালের ৮ জুন রাতে জাকির হোসেন মুকুল তাঁর কলাটুপি গ্রামের ঘেরের বাসা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় আসামিরা হত্যা করে লাশ কাদামাটির মধ্যে পুঁতে রাখে। পরদিন সকালে লাশ উত্তোলনের পর শ্যামনগর থানায় মামলা করেন জাকিরের বাবা কেরামত গাজী।
এই মামলায় পুলিশ জেসমিন ও তাঁর প্রেমিক মুকুলসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। আদালত আসামিদের সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ছয়জনকে বেকসুর খালাস দেন এবং জেসমিন ও মুকুলকে সাজার রায় দেন।
মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ, অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী ও অ্যাডভোকেট এস এম হায়দর। সরকারের পক্ষ থেকে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি সৈয়দ জিয়াউর রহমান।