‘গাজীপুরের ঘটনা একটি কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’
‘সরকারের তত্ত্বাবধানে কারখানার বয়লার পরীক্ষা করা বা এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বছরে অন্তত দুবার পরীক্ষা করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও বেশির ভাগ কারখানাতেই এ নিয়ম অনুসরণ করা হয় না। গাজীপুরের ঘটনা কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড।’
আজ মঙ্গলবার গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের এক জরুরি সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর হাতিরপুলে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় দপ্তরে ওই সভা আয়োজিত হয়। গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
সভায় নেতারা বলেন, ‘মাল্টিফ্যাবস লিমিটেডের বয়লার বিস্ফোরণের ধাক্কায় কর্মরত শ্রমিকদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। মাথা, হাত, নাড়িভুঁড়ি শরীর থেকে আলাদা হয়ে গেছে। এই ধরনের ভয়াবহ ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলেছে। গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর গাজীপুরে টাম্পাকো ফয়েল কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে নিহত হন ৩৮ জন শ্রমিক এবং গুরুতরভাবে আহত হন আরো ১৫ জন। তারপরেই সুপারিশ করা হয়েছিল সব কারখানার বয়লার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করার।’
নেতারা আরো বলেন, ‘অবিলম্বে সব নিহত শ্রমিকের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে হবে। যাঁরা এখন পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন তাঁদের পরিচয়ও প্রকাশ করতে হবে এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। নিহত সকল শ্রমিককে বাকি জীবনের আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ৫ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে শ্রমিক হত্যার দায়ে মালিকসহ দোষীদের শাস্তির দাবিতে এবং নিহত শ্রমিকদের বাকি জীবনের আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহত শ্রমিকদের যথাযথ চিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়কারী বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ টেক্সটাইল-গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. ইয়াসিন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখ্তার, সমন্বিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পথিক, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের উপদেষ্টা শামীম ইমাম, জাতীয় সোয়েটার গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এ এ এম ফয়েজ হোসেন, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, গার্মেন্টস শ্রমিক সভার কেন্দ্রীয় নেতা শামসুল আলম, জাতীয় পোশাকশিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাস্টার মোখলেসুর রহমান এবং গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের সংগঠক তৌহিদুল ইসলাম।