বামপন্থী রাজনীতিবিদ আবদুস সালাম আর নেই
বামপন্থী রাজনীতিবিদ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আর নেই। তিনি আজ শুক্রবার সকাল ৭টায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আবদুস সালাম দীর্ঘদিন কিডনি ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটলে দ্রুত বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয়।
প্রবীণ এই রাজনীতিক গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়কারী (সাধারণ সম্পাদক) হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ শ্রম ইনস্টিটিউটের (বাশি) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক ছিলেন।
বাংলাদেশ শ্রম ইনস্টিটিউট এক বিবৃতিতে আবদুস সালামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ এক যোদ্ধাকে হারিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য আগামীকাল শনিবার সকালে আবদুস সালামের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন বাশি ট্রাস্টি বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ গোলাম মুর্শেদ।
১৯৪৯ সালের ২৯ নভেম্বরে মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণকারী আবদুস সালাম অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালে অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস ফেডারেশনে যোগ দেন। এরপর তিনি মওলানা ভাসানীর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সঙ্গে যুক্ত হন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ও তাঁর সহযোদ্ধারা সঠিক রাজনৈতিক দিশা নির্ধারণে কাজ করতে থাকেন। গড়ে তোলেন প্রগতিশীল ছাত্র মৈত্রী, মার্কসবাদী লেখক সংঘ এবং বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী সম্মেলনসহ বেশ কিছু সংগঠন।
১৯৭১ সালে তাঁদের গড়ে তোলা সংগঠন, যা ইতিহাসে ‘মাইতি গ্রুপ’ হিসেবে পরিচিত, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সে সময় তিনি বাম পায়ে গুলিবিদ্ধও হন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ‘জুরিসডিকশনে’ স্নাতকোত্তর শেষ করেন।
পরে রাজশাহী কোর্ট ও ঢাকার সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশা করেন। রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন দলের সঙ্গে যুক্ত হলেও মতাদর্শিক কারণে তিনি সেসব দল পরিত্যাগ করতে বাধ্য হন। ১৯৯৬ সালে গড়ে তোলেন গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, যা পরে গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে একীভূত হয়।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত ‘সংবিধান ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর’ তাঁর একমাত্র প্রবন্ধ সংকলন।