আজ চড়িয়া গণহত্যা দিবস
সিরাজগঞ্জে আজ চড়িয়া গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে সলঙ্গার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের চড়িয়া শিকার গ্রামে পাকবাহিনী দেড় শতাধিক নারী-পুরুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
সিরাজগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গাজী সোহরাব আলী সরকার জানান, পাকিস্তানি সেনারা ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল আরিচা-নগরবাড়ী ফেরি পার হওয়ার পর পাবনা-বগুড়া সড়ক দিয়ে আসছিল।
খবর পেয়ে হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাটধারী ও চড়িয়া গ্রামের যুবকরা পাকিস্তানি সেনাদের প্রবেশপথে রাস্তার ওপর গাছের গুঁড়ি ফেলে বাধা দেন। বাধা পেয়ে পাকিস্তানি সেনারা সেখানে অতর্কিতভাবে মর্টার শেল ছুড়তে শুরু করেন।
শেল ফাটার শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় চড়িয়া, পাটধারী ও হরিপুর গ্রামের মানুষ প্রাণভয়ে এদিক-ওদিক ছুটতে থাকে।
পাকিস্তানি সেনারা কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে এলাকায় হামলা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে কিছু মানুষ দিশেহারা হয়ে চড়িয়া শিকার কালিবাড়ীর দক্ষিণে মাঠের মধ্যে আশ্রয় নেয়। হানাদার বাহিনী সেখানে গিয়েও হামলা চালায়। সেনারা দুটি দলে ভাগ হয়ে চড়িয়া কালীবাড়ীর দিকে যায়। সেখানে হিন্দুপাড়ার ১৫ জনকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করেন।
কালীবাড়ী হত্যাযজ্ঞ ও অগ্নিসংযোগের পর চড়িয়া মধ্যপাড়ার দিকে যান হানাদার বাহিনী। এখানে কবরস্থান ও জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা ৫০-৬০ জন নিরীহ মানুষকে ধরে এনে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়। প্রায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষকে হত্যা করেন পাকসেনারা।
পরদিন বিকেলে কিছু লাশ জানাজা ছাড়াই মাটিচাপা দেওয়া হয়। আর অধিকাংশ শেয়াল কুকুর ও শকুনের আহারে পরিণত হয়।
সলঙ্গা থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার গাজী তোজাম্মেল হক শেখ জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও চড়িয়া গণহত্যা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।