রক্ষকরূপী ভক্ষকের কারাদণ্ড
রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। যার দায়িত্ব কিশোরীদের নিরাপত্তা দেওয়া, সেই ব্যক্তির হাতেই প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত হচ্ছে, শিকার হচ্ছে যৌন নিপীড়নের। গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোরীদের যৌন নিপীড়নের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বাধ্য হয়েছেন খোদ প্রধান বিচারপতিও।
গতকাল মঙ্গলবারই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তাঁর গাজীপুর সংশোধনাগার পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সুপ্রিম কোর্টের একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক শিশু-কিশোরীকে গ্রেপ্তার করে সংশোধনাগারে আনা হলেও তাদের আদালতে হাজির করা হয়নি। এতে করে বিনা বিচারে বছরের পর বছর তারা সেখানে অবস্থান করছে। এ ছাড়া ওই সংশোধনাগারের ভেতরে অনেক শিশু-কিশোরীকে যৌন নিযাতন করা হয় এমন অভিযোগও আমি পেয়েছি।’
আর আজ বুধবার গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রের কিশোরীদের যৌন হয়রানির দায়ে কেন্দ্রের এক নিরাপত্তাকর্মীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্নিগ্ধ্যা তালুকদার নিরাপত্তারক্ষী কাওসার ভূঁইয়াকে (৩০) এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। কাওসার কিশোরগঞ্জ জেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা।
গাজীপুরের সহকারী কমিশনার শরিফুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ীতে কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রের কয়েকজন নিবাসীকে মারধর ও যৌন হয়রানি করে ওই প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মী কাওসার।
আজ সকালে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে যান। এ সময় বাল্যবিবাহের অভিযোগে আটক ওই কেন্দ্রের কয়েকজন কিশোরী যৌন হয়রানি ও মারধরের বিষয়টি তাঁদের কাছে প্রকাশ করে। পরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়। এ সময় নিরাপত্তাকর্মী কাওসার অপরাধ স্বীকার করেন।