যেখানে জুতায় পানি খাওয়ানো হয় নারীদের

ভারতের দক্ষিণ রাজস্থানের একটি অঞ্চল ভিলওয়ারা। ভিলওয়ারা থেকে আরো কিছুটা দূরে তিলকার গ্রাম। এই গ্রামে আছে বানকায়া মাতার মন্দির। ভারতের আরো অনেক ‘পবিত্র স্থানের’ মতো এই মন্দিরের বিশেষত্ব হলো এখানে নারীদের বিভিন্ন রোগমুক্তির ‘ওষুধ’ দেওয়া হয়। বানকায়া মাতার মন্দিরের ওষুধগুলো অবশ্য একটু বিচিত্র বটে! কারণ এখানে চিকিৎসার নামে নারীদের পুরুষের জুতায় করে পানি খাওয়ানো হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিন ডটকম জানায়, প্রতি সপ্তাহে আশপাশের গ্রামগুলো থেকে একশর বেশি নারীকে এই বানকায়া মাতার মন্দিরে আনা হয়। এবং এখানে তাঁদের সর্বরোগের আরোগ্য হিসেবে পুরুষের জুতায় করে পানি খাওয়ানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, বানকায়া মাতার মন্দিরে চিকিৎসার জন্য কোনো নারী এলে প্রথমে মন্দিরের বৈদ্য বা পুরোহিতের জুতা বহন করে একটি জলাশয়ে পাঠানো হয়। নারীরা সাধারণত দাঁতে কামড়ে ওই জুতা বহন করেন। এরপর মন্দির থেকে ২০০ ধাপ সিঁড়ি বেয়ে নিচের জলাশয়ে গিয়ে ওই জুতায় করে পানি পান করেন। এতে ওই নারীর শরীর থেকে যাবতীয় দুষ্ট আত্মার সঙ্গে রোগও বের হয়ে যায় বলে বিশ্বাস করেন পুরোহিতরা।
১৯৯৫ সালে প্রত্যন্ত গ্রামের এই মন্দিরের ছবি প্রথম তুলেছিলেন রাজস্থানের খ্যাতনামা আলোকচিত্রী সুধীর কাসলিওয়াল। বানকায়া মন্দিরের ছবি নিয়ে আলাপের সময় নিউজ এইটিন ডটকমকে তিনি জানান, বহু আগে থেকেই স্থানীয়দের কাছে ওই মন্দিরের খ্যাতি। স্থানীয় লোকদের অন্ধবিশ্বাসের ওপর ভর করে এই বর্বর প্রথাটি ওখানে টিকে আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সুধীর জানান, ‘২১ বছর আগে আমি হুমকির মুখে যে আলোকচিত্র ধারণ করেছিলাম, এতগুলো বছর পরেও সেখানে একই অবস্থা চলছে। এটা দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি জানান, এই বর্বর ‘ধর্মীয় আচার’ পালনকালে নারীদের শারীরিকভাবেও হেনস্তা করা হয়।