সৌদি আরবের মক্কা নগরীর পবিত্র জমজম কূপের পানি মুসলমানদের হজ্ব ও ওমরাহের অন্যতম অনুষঙ্গ। এই পানিকে ইসলাম ধর্মে পবিত্রতম পানি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অনেকে মনে করেন পবিত্র এই পানিপানে স্বাস্থ্য সমস্যাও দূর হয়। 

ধর্মীয় কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবছর সৌদিতে পাড়ি জমানো লাখ লাখ মুসলমান হজ ও ওমরাহ শেষে ফিরে আসার সময় সঙ্গে নেন জমজমের পানি।

তবে এবার থেকে জমজম কূপের পবিত্র পানি সংগ্রহ করতে হলে পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে। পাসপোর্ট ছাড়া কোনো হজযাত্রীকেই জমজমের পানি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।

গত রোববার সৌদি আরবের প্রভাবশালী পত্রিকা আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সৌদি আরবের এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের নতুন নিয়মানুযায়ী হজ ও ওমরাহযাত্রীরা দেশে আসার সময় সঙ্গে নয় রিয়েলে পাঁচ লিটারের বোতলজাত পানি নিতে পারবেন। আর এ জন্য তাঁদের পাসপোর্ট দেখাতে হবে। প্রতি পাসপোর্টে একজন ব্যক্তি এক বোতল পানি সঙ্গে নিতে পারবেন। এর আগে একজন হজযাত্রী ১০ লিটার করে পানি সংগ্রহ করতে পারতেন।

তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবার থেকে পবিত্র জমজমের পানি হাজিদের মক্কা থেকে বহন করে আনতে হবে না। সংশ্লিষ্ট বিমান কর্তৃপক্ষই বিমানবন্দরে হাজিদের জন্য জমজমের পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবেন। সেখান থেকেই সোজা বিমানে উঠবে  জমজমের পানি। হাজিরা ওই পানির বোতল পাবেন দেশে ফেরার পর।

আরব নিউজ জানায়, জমজমের পানি নিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনেক সময় দালালদের খপ্পরে পড়তে হয়। অবৈধ পানি বিক্রেতারা এই পানির সঙ্গে সাধারণ পানি মিশিয়ে অতিরিক্ত দামে তা বিক্রি করেন। আর তাই দেশটির বিমানবন্দরগুলোতে জমজমের পানি বিক্রি বন্ধ করতে বাদশা আবদুল্লাহর গ্রহণ করা প্রকল্পের অধীনে ন্যাশনাল ওয়াটার কোম্পানি এ ব্যবস্থা চালু করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জমজমের প্যাকেটজাত পানি সরবরাহ বন্ধ করার ব্যবস্থা শুরু করেছে।

জেদ্দার বাসিন্দা হাসান আহমেদ আবর নিউজকে জানান, জমজমের পানি হিসেবে নকল যে পানি ও বোতল ব্যবহার হয় সম্প্রতি মক্কা পুলিশ এ ধরনের ভুয়া কারখানায় অভিযান চালিয়েছে। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত ভুয়া জমজম পানির একটি প্রতিবেদন পড়ার পর তিনি বিমানবন্দর থেকে ন্যাশনাল ওয়াটার কোম্পানি অনুমোদিত প্যাকেজজাত পানি কেনার সিদ্ধান্ত নেন।

সৌদির আরেক ওমরাহ পালনকারী রিয়াদের বাসিন্দা হাফিজ আবদুর রহমান বলেন, ‘আমি মক্কা থেকে জমজম পানি আনতে পারি। তবে বিমানবন্দর এটা করতে অনুমতি দেবে না। পাসপোর্ট ছাড়াই আমি রিয়াদ থেকে ফিরেছি। আর সে কারণে পানি আনতে পারিনি। এ ছাড়া মাত্র পাঁচ লিটারের অনুমতি ঠিক হয়নি বলেও মনে করেন তিনি।