ফের শুরু হলো অভিবাসীদের তুরস্কে পাঠানোর প্রক্রিয়া
ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের গ্রিস থেকে তুরস্কে পাঠানোর প্রক্রিয়া ফের শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় কয়েকশ অভিবাসীকে দুটি নৌকায় করে তুরস্কে পাঠানো হয়। ইউরোপে অভিবাসন সংকট কমানোর লক্ষ্যে সম্প্রতি অভিবাসীদের তুরস্কে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, গত রোববার প্রথম দফায় ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তুরস্কে পাঠানো হয়, যাদের অধিকাংশ ছিল পাকিস্তানি। তবে প্রক্রিয়া শুরুর পর পরই আশ্রয় আবেদনের হিড়িকের পরিপ্রেক্ষিতে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।
জানা গেছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নেওয়ার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে তুরস্কের চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০ মার্চের পর গ্রিসে যাওয়া অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তুরস্কে ফেরত পাঠানো হবে। শরণার্থী হিসেবে আবেদন না করা অথবা অবেদন গৃহীত না হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীরা অবৈধ বলে বিবেচিত হবেন। আর তুরস্কে ফেরত পাঠানো প্রত্যেক সিরীয় অভিবাসনপ্রত্যাশীর বিপরীতে অপর একজন সিরীয় অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সরাসরি ইউরোপে থাকার অনুমতি দেবে ইইউ।
গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, ইইউ চুক্তির বাকি শর্তগুলো মানলেই তারা ফিরিয়ে দেওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের গ্রহণ করবে। চুক্তির বাকি শর্তগুলো হলো, ইইউ তুরস্ককে ৩০০ কোটি ইউরো অনুদান দেবে। ইইউতে ঢোকার প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করতে হবে। একই সঙ্গে চলতি বছর জুনের মধ্যেই ইইউর শেনজেন অঞ্চলে তুরস্কের নাগরিকদের ভিসাহীন ভ্রমণের সুযোগ দিতে হবে। রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান আরো বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নে ইইউ পদক্ষেপ না নিলে, তুরস্কও এর বাস্তবায়ন করবে না।
এরই মধ্যে অভিবাসন বিষয়ে ইইউ ও তুরস্কের চুক্তির নিন্দা জানিয়েছে অনেক মানবাধিকার সংগঠন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দাবি করেছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য তুরস্ক কোনো নিরাপদ দেশ নয়। একই সঙ্গে সিরীয়দের জোরপূর্বক নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে তুরস্ক—এমন দাবি করেছে অ্যামনেস্টি। আর গত বৃহস্পতিবার সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গ্রিসের দ্বীপগুলোতে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
বিবিসির তথ্যমতে, চলতি বছরের শুরু থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এক লাখ ৫২ হাজার ১৩৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী গ্রিসে পৌঁছেছে, যার ৩৭ শতাংশ শিশু। ৫৩ শতাংশ অভিবাসী গ্রিসের লেসবস দ্বীপে পৌঁছেছে। আর তুরস্ক থেকে নৌকায় করে গ্রিসের দ্বীপে যাওয়ার পথে মারা গেছে ৩৬৬ অভিবাসনপ্রত্যাশী। ২০১৫ সালে আট লাখ ৫৩ হাজার ৬৫০ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপ পৌঁছেছে।