কলকাতায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবস।
আজ রোববার সকালে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের উদ্যোগে পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট ক্রসিং মোড়ে বাংলাদেশ গ্রন্থাগার ও তথ্যকেন্দ্রর সামনে থেকে একটি প্রভাত ফেরি বের করা হয়। প্রভাত ফেরি কলকাতা শহরের বেশ কয়েকটি জায়গা ঘুরে ডেপুটি হাইকমিশন চত্বরে এসে শেষ হয়। তারপর শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার জকি আহাদ, হেড অব চ্যান্সারি মিয়া মহম্মদ মইনুল কবির, ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) মোফাকখারুল ইকবাল, ভারত-বাংলা মৈত্রী সমিতির সহসভাপতি ও কংগ্রেস বিধায়ক অসিত বরণ মিত্র।
এরপর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নিয়ে বাণী পাঠ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ভাষা দিবসের তাৎপর্য ব্যখ্যা করতে গিয়ে জকি আহাদ বলেন, ‘১৯৫২ সালের এ দিনে আমার বাংলাদেশের সোনার ছেলেদের বুকের তাজা রক্তে লাল হয়ে উঠেছিল ঢাকার রাজপথ। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। সেই থেকে আমরা প্রতিবছরই শহীদ দিবস পালন করে আসছি। এরপর ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ভাষার মর্যাদা দিতে গিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। তারপর থেকে বাংলার সম্মান, যা আমরা প্রথমে পেয়েছিলাম, তা আরো বহু গুণে বেড়ে গেল।’ বাংলা ভাষার মর্যাদা ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও এদিন আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অন্যদিকে, এদিন কলকাতার অ্যাকাডেমির ছাতিমতলা চত্বরেও ভাষা-চেতনা সমিতির তরফে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শনিবার রাত ১২টায় মশাল মিছিল বের করা হয়, এ ছাড়া বাউল গানের পাশাপাশি চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও দিনটি যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে সেখানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, শিক্ষার্থীরা।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পক্ষ থেকে কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের ভাষামঞ্চে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়সহ রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা।
ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তেও ‘দুই বাংলা মৈত্রী সমিতি’র তরফে শহীদ দিবস উপলক্ষে সকাল থেকে সারা দিন ধরে চলেছে নানা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন দুই বাংলার বহু বিশিষ্ট মানুষ।