আদালতের রায়ে রাস্তা ঝাঁট দিচ্ছেন তাঁরা
রোজ সকালে ঝাঁটা হাতে বেরিয়ে পড়েন চার যুবক। প্রতিদিন সাত ঘণ্টা করে রাস্তা ঝাঁট দেওয়াই তাঁদের কাজ। আর সেই কাজের সময়ে কোনো ফাঁকি চলবে না। কেননা, সে সময় তাঁদের পেছনে থাকে পুলিশি নজরদারি। নাহ, এটা কোনো সাফাইকর্মীর কাজ নয়, নিজেদের কৃতকর্মের শাস্তি হিসেবেই তাঁদের এ কাজ করতে হচ্ছে।
আদালতের নির্দেশে এমন ঘটনা ঘটছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের থানে এলাকায়। থানের বিভিন্ন রাস্তায় রোজ সকাল হতেই ঝাঁটা হাতে বেরিয়ে পড়েন অঙ্কিত যাদব, সুহাস ঠাকুর, অমিত আধকলে ও মিলিন্দ মোর। চার যুবকের অপরাধ, তাঁরা এক তরুণীর শ্লীলতাহানি করেছিলেন। আর সেই অপরাধেই ভারতের বোম্বে হাইকোর্ট তাঁদের দৈনিক সাত ঘণ্টা করে রাস্তা সাফাইয়ের কাজ করতে দেন। গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে তাঁদের এ অভিনব শাস্তি।
সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, গত বছর সেপ্টেম্বরে এক অনুষ্ঠানে এক তরুণীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ ওঠে ওই চার যুবকের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই তরুণীকে সাহায্য করার জন্য এক ব্যক্তি এগিয়ে এলে তাঁকে লোহার রড দিয়ে পেটায় ওই চার যুবক। এ ঘটনায় আদালতের শরণাপন্ন হন ওই তরুণী। শ্লীলতাহানি এবং খুনের চেষ্টার অপরাধে অপরাধী সব্যস্ত হন ওই চার যুবক।
সম্প্রতি বোম্বে হাইকোর্ট এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত রায়ে বলেন, চার যুবকের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার রুপি জরিমানার পাশাপাশি আগামী ছয় মাস ধরে প্রতিদিন সাত ঘণ্টা করে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন রাস্তা ঝাঁট দিতে হবে পুলিশের নজরদারিতে।
রায়ের পর এরই মধ্যে চার যুবক জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেছেন। সেই অর্থ জমা পড়েছে টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের তহবিলে। পাশাপাশি গত রোববার থেকে কার্যকর শুরু হয়েছে ওই চার যুবকের শাস্তিও।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত ওই চার যুবক। পাশাপাশি তাঁরা খুশি এই ভেবে যে, আদালত তাঁদের জেলে না পাঠিয়ে এভাবে দেশের সেবা করার সুযোগ করে দিয়েছেন।