কাশ্মীরে সরকার গঠন নিয়ে বিজেপি-কংগ্রেস দ্বৈরথ
ভারতের কাশ্মীর রাজ্যের ক্ষমতাসীন পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) সরকার গঠন নিয়ে বিজেপি-কংগ্রেস দ্বৈরথ ক্রমে প্রকাশ্যে আসছে। গত সপ্তাহে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ সাঈদের মৃত্যুর পর পিডিপির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতির সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয়ে আছেন কাশ্মীরের জোট সরকারের শরিক ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। আর এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের বিজেপি সভাপতি নির্মল সিং নিজেই।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, গত বছর মার্চ মাসে রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করেছিলেন পিডিপি নেতা মুফতি মুহাম্মদ সাঈদ। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন পিডিপির মুফতি সাঈদ, উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপির নির্মল সিং। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন বিষয়ে মুফতি সাঈদ ও নির্মল সিংয়ের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সামনে চলে আসছিল।
জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচনের পর পিডিপি-বিজেপি জোট নিয়ে বেশ অশান্তির আবহ সৃষ্টি হয়েছিল। আর পিডিপি-বিজেপি জোট সরকার গঠনের বিরুদ্ধে দলে সবচেয়ে বেশি উচ্চকণ্ঠ ছিলেন মুফতি সাঈদের মেয়ে ও দলের প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতি।
এরই মধ্যে গত ৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার অসুস্থতাজনিত কারণে ৭৯ বছর বয়সী মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ সাঈদ দিল্লির এইমস হাসপাতালে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর মুফতি মুহাম্মদ সাঈদের মেয়ে এবং পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু কাশ্মীরে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী বাবার মৃত্যুর চার দিন না পেরোতেই ক্ষমতা গ্রহণে রাজি হননি মেহবুবা। তার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর আসন খালি থাকায় রাজ্যে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হয় এবং ৯ জানুয়ারি রাতে রাজ্যে গভর্নরের শাসন জারি করা হয়েছে।
এদিকে মেহবুবার দলের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, বিজেপিকে ছেড়ে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকার গড়তে পারেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি। গত রোববার বিকেলে মুফতি সাঈদের মৃত্যুর চার দিন পর কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধী কাশ্মীরে মেহবুবা মুফতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য যান। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে ওই দিন কংগ্রেস নেতা এবং রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবী আজাদ, দলীয় মহাসচিব অম্বিকা সোনি, সাইফুদ্দিন সোজ, রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট গুলাম আহমদ মীর সঙ্গে ছিলেন।
অবশ্য সোনিয়া গান্ধীর পাশাপাশি মেহবুবা মুফতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহনমন্ত্রী নিতীন গড়কড়িও। তবে মুফতির মৃত্যুজনিত কারণে শোক জ্ঞাপনকে কেন্দ্র করে সোনিয়া ও মেহবুবা যেভাবে কাছাকাছি এসেছেন, তাতেই রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ সৃষ্টি হওয়ার জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে।
তবে বিজেপি নেতা নির্মল সিং আশা প্রকাশ করে বলেছেন, অটুট থাকবে পিডিপি-বিজেপি জোট। এ অবস্থায় পরিবর্তন হওয়ার কোনো প্রশ্ন নেই। তবে নির্মল সিংয়ের এমন দাবির পরও জোটের হাওয়া অন্যদিকে ঘুরতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।