৫০ বছরের ভয়াবহতম বন্যায় ডুবে গেছে চার দেশ
গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় প্যারাগুয়ে, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে ও ব্রাজিলের বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে গেছে। বন্যার কারণে দক্ষিণ আমেরিকার চার দেশের দেড় লাখের বেশি স্থানীয় বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক এ বিপর্যয়ে এখন পর্যন্ত ছয়জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে এ আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে বলে আজ রোববার বিবিসিকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কর্মকর্তারা। বিষুবরেখা বরাবর প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্র পৃষ্ঠের অস্বাভাবিক উষ্ণতার কারণে সৃষ্টি হওয়া আবহাওয়াগত পরিবর্তন ‘এল নিনোর’ কারণে এই দুর্যোগ এসেছে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা।
বন্যায় আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে প্যারাগুয়ের অবস্থা বেশি খারাপ। দেশটির রাজধানী আসুনসিয়ন থেকে এরইমধ্যে প্রায় ৯০ হাজার লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শহরটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে সরকার। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ঝড়ে গাছ পড়ে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সরকারিভাবে নিহতের কোনো সংখ্যা জানানো হয়নি।
এ ছাড়া দেশটির বিভিন্ন এলাকায় অন্তত দুই শতাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে প্যারাগুয়ের বেশির ভাগ এলাকা। দেশটির জাতীয় জরুরি দপ্তর বলেছে, এল নিনোর সরাসরি প্রভাবে বন্যা দেখা দিয়েছে, যেটি বৃষ্টিপাতের মাত্রা ও বন্যা পরিস্থিতি প্রবল করেছে।
উত্তর আর্জেন্টিনার ২০ হাজার বাসিন্দাকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে। দেশটির জাতীয় মন্ত্রিসভার প্রধান মার্কোস পেনা জানান, দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় ইতিমধ্যে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের বন্যা যাতে না হয় সেজন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাউরিকিও মাকরি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
ব্রাজিলের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশটির সীমান্তবর্তী শহর কনকর্ডিয়া থেকে ২০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ৫০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল। দেশটির প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফ বন্যা আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
অপররদিকে উরুগুয়েতে প্রায় ৯ হাজার লোক ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির জরুরি দপ্তর।
এদিকে ব্রাজিল ও উরুগুয়েতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও প্যারাগুয়ে ও আর্জেন্টিনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি আরো কয়েকদিন অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন দেশগুলোর আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা।