কোকাকোলার বিজ্ঞাপনে বর্ণবাদ
বড়দিন উৎসব (ক্রিসমাস) উপলক্ষে মেক্সিকোতে প্রচারিত কোকাকোলার বিজ্ঞাপন বিতর্কিত হয়েছে। ঐক্য ও আনন্দ বোঝানোর ওই বিজ্ঞাপনে দেশটির কালো আদিবাসীদের প্রতি বর্ণবাদী আচরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে একটি মানবাধিকার সংস্থা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
কোকাকোলার বিজ্ঞাপনচিত্রে দেখা যায়, একদল শ্বেতাঙ্গ তরুণ ক্রিসমাস ট্রি তৈরি করছে এবং মেক্সিকোর তন্দ্রাপের কালো আদিবাসীদের কাছে কোকাকোলা দিচ্ছে। কোকাকোলা কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে মেক্সিকোর অধিবাসীদের ঐক্য ও আনন্দ বোঝানো হয়েছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, কোকাকোলা মনে করেছিল, তাদের বিজ্ঞাপনটি মেক্সিকোবাসীর কাছে সাদরে গৃহীত হবে। তবে এই বিজ্ঞাপনচিত্রে বর্ণবাদী মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মেক্সিকোর ভোক্তা অধিকার ও মানবাধিকার সংগঠন কনজ্যুমার পাওয়ার।
কনজ্যুমার পাওয়ারের আলেজান্দ্রো কালভিলো আলজাজিরাকে বলেন, কোকাকোলার বিজ্ঞাপনে দুই ধরনের মানুষকে বোঝানো হয়েছে। একটি ধরন হলো শ্বেতাঙ্গ, যাঁরা সুখী। এই ব্যক্তিরা আদিবাসী শহরে যায় এবং কোক ও ক্রিসমাস ট্রির মাধ্যমে আনন্দ ছড়িয়ে দেয়। এ বিষয়টি পুরোপুরি বর্ণবাদী মনোভাব প্রকাশ করে বলে দাবি কালভিলোর।
মেক্সিকোসহ বিশ্বজুড়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমা চেয়ে এরই মধ্যে নিজেদের বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিয়েছে কোকাকোলা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৯০ বছর ধরে মেক্সিকোতে আছে তারা। এই সময়কালে কোকাকোলা ঐক্য ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে বিভেদহীন সমাজ গড়ার পক্ষে ছিল। সম্প্রতি তাদের বক্তব্য ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছে কোকাকোলা।
বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নেওয়া মেক্সিকোর আদিবাসীরা জানিয়েছে, এর চিত্রায়ণের সময় তাঁরা কোনোভাবেই বর্ণবাদী আচরণ পাননি। আর নিজেদের প্রচার হওয়ায় তাঁরা আনন্দিত।
আলজাজিরা জানায়, কোকাকোলা মেক্সিকোর সবচেয়ে জনপ্রিয় কোমল পানীয়। ডায়াবেটিস ও স্থূলতার জন্য দায়ী হলেও মেক্সিকোবাসীর জীবনে এই কোমল পানীয় একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। তাই কোকাকোলার বিজ্ঞাপন নিয়ে বিতর্ক দেশটিতে এর জনপ্রিয়তায় কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।