ইরানকে কোণঠাসা করতে ইসরায়েলের সঙ্গে সুর মিলাচ্ছে সৌদি
সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম আল আসাফ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণে তাঁর দেশের দুটি তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলার জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব ঠেকানোর জন্য তেহরানের ওপর চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর ওই ভাষণে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির প্রচেষ্টায় শামিল হতে বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি ইরানের বিরুদ্ধে এমন সময় এসব বক্তব্য দিলেন যখন সৌদি কর্মকর্তারা বিভিন্ন দেশে ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞে লিপ্ত।
গত কয়েক দশকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সংকট, যুদ্ধ ও রক্তপাত চলে আসছে। এ বিপর্যয়ের পেছনে আমেরিকার প্রধান দুই সহযোগী অর্থাৎ শিশু হত্যাকারী সৌদি আরব ও দখলদার ইসরাইলের হাত রয়েছে।
সংবাদমাধ্যম পার্সটুডে এক প্রতিবেদনে জানায়, উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে লেলিয়ে দিয়ে ইসরাইল ও সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। একইসঙ্গে তারা বিশ্বের অর্থনীতি ও জ্বালানি সম্পদকেও অনিরাপদ করে তুলেছে। বর্তমানে তারা ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।
ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাতেজও জাতিসংঘকে ব্যবহার করে ইরানকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের সমর্থক অভিহিত করে ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতি সমর্থন দিতে আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
অন্যদিকে ইরানের প্রতি চরম বিদ্বেষ পোষণকারী সৌদি কর্মকর্তারা হতাশ ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তারা তাদের হতাশার প্রকৃত কারণ উপলব্ধি করতে পারছে না।
সৌদি আরব ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলেও ইয়েমেনের জনগণ পাল্টা আঘাত হানায় এখন সৌদি আরব দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ইয়েমেনের চোরাবালিতে আটকা পড়ে অতীতের মতোই সৌদি সরকার তাদের দুরবস্থার জন্য অন্য দেশকে দায়ী করার চেষ্টা চালাচ্ছে। অর্থাৎ ইয়েমেন ইস্যুতে ইরানকে দায়ী করছে। সৌদি আরবের ধারণা মার্কিন হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা ইরানকে নতজানু হতে বাধ্য করবে।
বর্তমানে সৌদি আরব দেশের ভেতরে ও বাইরে দুদিক থেকেই প্রচণ্ড চাপের মধ্যে আছে। আমেরিকার ভুল নীতির খেসারত দিতে হচ্ছে সৌদি আরবকে। বিভিন্ন কারণে কাতার, ওমান ও কুয়েতের মতো দেশগুলোর সঙ্গেও সৌদি আরবের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। কারণ এসব দেশে সৌদি হস্তক্ষেপের কারণে এ সংকট তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে সৌদি আরব এ অঞ্চলে যে যুদ্ধ শুরু করেছে তা এখনো চলছে এবং এতে রিয়াদের কোনো লাভ হয়নি। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষক আব্দুল বারি আতাওয়ান দৈনিক রাই আল ইয়াওমে লেখা এক নিবন্ধে বলেছেন, আমেরিকার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইরান ভীতি দেখিয়ে আরব দেশগুলোর কাছ থেকে সুবিধা আদায় করে নেওয়া।