রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের ৪ প্রস্তাব
চলমান রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাধানে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এবার চারটি প্রস্তাব তুলে ধরতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি এই চার প্রস্তাব তুলে ধরবেন বিশ্বনেতাদের সামনে। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ তথ্য জানিয়েছে।
চার প্রস্তাবের মধ্যে থাকবে-
রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন এবং আত্মীকরণে মিয়ানমারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পূর্ণ প্রতিফলন দেখাতে হবে।
বৈষম্যমূলক আইন ও রীতি বিলোপ করে মিয়ানমারের প্রতি রোহিঙ্গাদের আস্থা তৈরি করতে হবে এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের উত্তর রাখাইন সফরের ব্যবস্থা করতে হবে।
রাখাইনে আন্তর্জাতিক বেসামরিক পর্যবেক্ষক রেখে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবশ্যই রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণগুলো বিবেচনায় নিতে হবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যান্য নৃশংসতার ঘটনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গতকাল মঙ্গলবার ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত রোহিঙ্গা সংকটবিষয়ক এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ওই চার প্রস্তাবের কথা জানান শেখ হাসিনা।
এর আগে ২০১৭ সালে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে রোহিঙ্গা নিধন বন্ধে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
পাঁচ দফায় ছিল-
কোনো শর্ত আরোপ ছাড়াই অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের ওপর সব ধরনের সহিংসতা ও জাতিগত নিধন স্থায়ীভাবে বন্ধ করা; জাতিসংঘ মহাসচিবের মাধ্যমে একটি অনুসন্ধানী কমিটি গঠন করা; জাতি ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত রাখাইনের সব নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিককে সুরক্ষা দিতে মিয়ানমারের ভেতরে নিরাপদ এলাকা তৈরি; বল প্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত হওয়া সব রোহিঙ্গা যেন নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে তাদের বাড়িতে ফিরতে পারে, সে ব্যবস্থা করা এবং রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কফি আনান কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট একটি রাজনৈতিক সমস্যা এবং এ সমস্যার মূল মিয়ানমারে। তাই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই খুঁজতে হবে।’
‘রোহিঙ্গাদের অবশ্যই তাদের মাতৃভূমিতে ফিরতে হবে, যেখানে তাঁরা দশকের পর দশক ধরে বসবাস করে আসছেন’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।