মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ অনুসরণ প্রয়োজন : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মহাত্মা গান্ধীর মানবিক আদর্শ ও নীতি সব বিভাজনকে দূরে ঠেলে ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। কারণ, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতা, ঘৃণা ও ধর্মান্ধতা মানবজাতিকে আগের চেয়ে অনেক বেশি বিভক্ত করছে।’
গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের ইকোসক চেম্বারে ভারতীয় মিশনে মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘নেতৃত্ব : সমসাময়িক বিশ্বে মহাত্মা গান্ধীর প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে ঘৃণা ও গোঁড়ামি সন্ত্রাসবাদের দিকে পরিচালিত করছে এবং সহিংস চরমপন্থা মানবজাতিকে আগের চেয়ে আরো বেশি বিভক্ত করছে। বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মতো চ্যালেঞ্জকে কার্যকরভাবে মোকাবিলায় গান্ধীজির জীবনদর্শন এবং সব মানুষের প্রতি তাঁর অটল বিশ্বাস আজও আমাদের একত্রিত করতে পারে।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘মহাত্মা গান্ধী একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক, একজন রাষ্ট্রনায়ক ও একজন সাধু। তিনি তাঁর সমস্ত জীবন মানবজাতির জন্য উৎসর্গ করেছেন। তিনি ছিলেন আশার আলো, অন্ধকারের আলো ও হতাশার ত্রাণকর্তা। তাঁর উজ্জ্বল ও মন্ত্রমুগ্ধ নেতৃত্ব বিশ্বকে দেখিয়েছিল, কোনো প্রকার সহিংসতা ছাড়া অহিংস উপায়ে পৃথিবী কাঁপানো সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন আনা সম্ভব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সামাজিক অবস্থান, মানুষের প্রতি তাঁর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, স্নেহ ও মমতা তাঁকে ‘মহাত্মা’ বানিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘পাকিস্তানের দখলদার হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর গণহত্যা চালালে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছিলেন।’
‘যখনই আমি বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব, তাঁর ত্যাগ ও মানুষের পক্ষে সংগ্রামের দিকটি লক্ষ করেছি, তখনই আমি তাঁর মধ্যে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে অনেক বড় মিল খুঁজে পেয়েছি’, যোগ করেন শেখ হাসিনা।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। সম্পদের স্বল্পতা ও অন্যান্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আমরা ভালোবাসা ও মমতা দেখিয়ে বিপুল রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যে গুণটি আমরা বঙ্গবন্ধু ও মহাত্মা গান্ধীর মধ্যে দেখেছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হিসেন লং, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন ছাড়াও অনুষ্ঠানে সাতটি দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীরা বক্তব্য দেন।