তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা বাতিল করলেন ট্রাম্প
একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলছে শান্তিচুক্তির প্রক্রিয়া, অন্যদিকে আফগানিস্তানের ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে তালেবান গোষ্ঠী। এমন অবস্থায় ক্ষুব্ধ হয়ে তালেবানের সঙ্গে প্রত্যাশিত শান্তি আলোচনা বাতিল বলে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রোববার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি ও জ্যেষ্ঠ তালেবান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত ছিল। ওয়াশিংটনের অদূরে প্রেসিডেন্টের বৈঠক বাড়ি ক্যাম্প ডেভিডে এ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে বৈঠকটি বাতিলের ঘোষণা এলো।
সম্প্রতি কাবুলে তালেবানের হামলায় মার্কিন সেনাসহ ১২ জন নিহত হওয়ায় ঘটনাটি উল্লেখ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটে বলেন, ‘যদি তারা (তালেবান) এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সময়ে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হয়, এমনকি তারা যদি নিষ্পাপ মানুষকে হত্যা করে, তাহলে সম্ভবত তাদের কোনো অর্থবহ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করে সমঝোতায় পৌঁছানোর ক্ষমতা নেই।’
শান্তিচুক্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষের দূত আফগান বংশোদ্ভূত জালমে খলিলজাদ এর আগে জানান, তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তির ‘মৌলিক কাঠামো’ সোমবার ঘোষণা করা হবে। এখন আগামীকাল সোমবার আসলেই সেটি ঘোষণা করা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
চুক্তির খসড়ায় বলা হয়, ২০ সপ্তাহের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে পাঁচ হাজার ৪০০ সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষের এই দূত।
আফগানিস্তানে এখনও ১৪ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার কাবুলে গাড়িবোমা হামলায় এক মার্কিন সেনাসহ ১২ জন নিহত হয়। ওই হামলার দায় স্বীকার করে তালেবান। এর মধ্যে ন্যাটো-নিয়ন্ত্রিত মিশনে দায়িত্বরত রোমানীয় এক সেনাও সেদিন প্রাণ হারান।
২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বর্তমানে তালেবানের দখলে আফগানিস্তানের সবচেয়ে বেশি জায়গা রয়েছে। তারা আফগান সরকারের সঙ্গে কখনোই আলোচনায় বসতে আগ্রহ দেখায়নি। তবে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নয় দফা আলোচনায় বসেছে তালেবান গোষ্ঠী। বৈঠকগুলো কাতারে অনুষ্ঠিত হয়।
আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার ৫০০ আন্তর্জাতিক সেনা নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে দুই হাজার তিনশর বেশি মার্কিন সেনা বলে জানা যায়।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের দেওয়া তথ্যমতে, এই যুদ্ধে ৩২ হাজারের বেশি সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়, ৫৮ হাজার নিরাপত্তাকর্মী এবং বিরোধী পক্ষের ৪২ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়।