কামাল-অমিত বৈঠক
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বৈঠকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিরাপদে ও দ্রুত স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ভারত সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অমিত শাহ।
গতকাল বুধবার দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সপ্তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন।
বৈঠকের শুরুতে ভারতের সদ্যপ্রয়াত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের অকালমৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন আসাদুজ্জামান খাঁন। এদিকে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় আসাদুজ্জামান খাঁনকে অভিনন্দন জানান অমিত শাহ।
পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের মানবিক সহযোগিতা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে দুই মন্ত্রী নিরাপত্তা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ সব বিষয়ে দুই দেশ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের সীমানা/ভূমি ব্যবহার করে কোনো সন্ত্রাসী, জঙ্গি, ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী যাতে ভারতসহ অন্য কোনো দেশের ক্ষতি সাধন করতে না পারে, সে বিষয়ে বাংলাদেশের গৃহীত নীতির ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আন্তসীমান্ত অপরাধ দমনের প্রয়োজনীয়তার কথা দুই মন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করেন। সভায় মাদক পাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধে উভয় দেশ যৌথভাবে কাজ করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ ও ভারতের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে উভয় পক্ষ সম্মত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভা শেষে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বৈঠকে ১৬ সদস্যের বাংলাদেশ দলের অন্য সদস্যরা হলেন—ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, সুরক্ষাসেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম, পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সোহাইল হোসেন খান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন আহম্মেদ, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুবকর সিদ্দীক, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক নীলিমা আক্তার, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বিশ্বাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. তারেক প্রমুখ।
ভারতের পক্ষে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই, ইউনিয়ন স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গৌভা ও সচিব (সীমান্ত ব্যবস্থাপনা) বি আর শর্মা প্রমুখ।