নোবেল বিজয়ীকে ট্রাম্পের এ কেমন কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রশ্ন!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তাঁর কার্যালয়ে গিয়েছিলেন ২০১৮ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী ইরাকের ইয়াজিদি নারী নাদিয়া মুরাদ। তবে সেখানে গিয়ে ট্রাম্পের কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রশ্নের কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়লেন নাদিয়া।
ট্রাম্পের সাথে কথা বলার একপর্যায়ে ইরাকের ইয়াজিদিদের সাহায্য করতে ট্রাম্পের কাছে আবেদন করেছিলেন এই নোবেলজয়ী। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তিনি ব্যাখ্যা করেন কীভাবে আইএস জঙ্গিরা ইয়াজিদিদের খুন করছে এবং নারীদের যৌন দাসী বানাচ্ছে।
২০১৪ সালে নাদিয়াসহ বেশ কয়েকজন ইয়াজিদি নারী আইএসের যৌন ডেরা থেকে বেরিয়ে এসে বিশ্বকে জানান কীভাবে নারীদের ওপর যৌন সহিংসতা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। ইয়াজিদিদের অধিকার ও স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার লড়াই এখনো করছেন তিনি। নাদিয়ার এই অসামান্য অবদানের জন্যই তাঁকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
সংবাদ সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, ট্রাম্পকে নাদিয়া বলেন, তাঁর মা ও ছয় ভাইকে খুন করেছে আইএস জঙ্গিরা। কমপক্ষে তিন হাজার ইয়াজিদি এখনো নিখোঁজ। এসব শুনে ট্রাম্প আহাম্মকের মত পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আপনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন? এটা অবিশ্বাস্যরকম ভালো। কিন্তু কেন আপনাকে নোবেল দিয়েছে?
ট্রাম্পের এমন বিব্রতকর প্রশ্ন শুনে এর পাত্তা নয়া দিয়ে নিজের কথা বলতে থাকেন নাদিয়া। নিজের ওপর যৌন নির্যাতনের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘আমার সাথে এমনটা হয়েছে, তবুও আমি থেমে যাইনি। আমি সবার কাছে স্পষ্ট করেছি কীভাবে আইএস জঙ্গিরা হাজার হাজার ইয়াজিদি নারীকে ধর্ষণ করেছে।’ তিনি আরো বলেন, এটা কোনো বিশেষ একটি পরিবারের বিষয় নয়। পুরো ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের অস্তিত্বের প্রশ্ন। এসব শুনে ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, আইএস তো নেই। তাহলে কুর্দিরা কিছু করছে? ওই সব এলাকা আমি ভালো করে জানি।
উল্লেখ, যৌন সহিংসতার ব্যাপারে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা তৈরির আন্দোলন করে ২০১৮ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ইরাকে জঙ্গিদের হাতে ধর্ষণের শিকার নাদিয়া। জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের হাতে তিনি প্রায় তিন মাস জিম্মি ছিলেন।
এই সময় আইএস জঙ্গিরা তাকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করেছে। ভয়ংকর সেই সময়ে চোখের সামনে জঙ্গিরা তাঁর ছয় ভাই ও মাকে খুন করে।