চার বোনের একমাত্র ভাইটি মারা গেলেন মালয়েশিয়ায়
মাত্র সাত মাস আগেই মালয়েশিয়া যান চাঁদপুরের মোহাম্মদ সোহেল। চার বোনের একমাত্র ভাই ছিলেন সোহেল। জীবিকার সন্ধানে, অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে যান তিনি। সড়ক দুর্ঘটনায় নিমেষে ভেঙে গেল সব স্বপ্ন, বোনদের একমাত্র অবলম্বন।
গত রোববার রাতে কুয়ালালামপুরে যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হন। এর মধ্যে পাঁচজনই বাংলাদেশি। তাঁদের মধ্যেই একজন ছিলেন সোহেল। তিনি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম আনোয়ার হোসেন। সাত মাস আগে কোম্পানির ভিসায় জীবিকার সন্ধানে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন তিনি। আনোয়ার হোসেনের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সোহেল দ্বিতীয়।
গতকাল সোমবার সকালে সোহেলের বাড়িতে মৃত্যুসংবাদ পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। প্রতিবেশীরা তাঁদের সান্ত্বনা দিতে ছুটে আসেন। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের কাছের একটি সড়কে দুর্ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বাসটি শ্রমিকদের নিয়ে গতকাল রাতে নীলাই, নেগরি সেম্বিলান থেকে এয়ারপোর্ট অভিমুখে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়।
কে এল আই বিমানবন্দরের ওসিপিডির সহকারী কমিশনার জুলকিফলি আদম শাহ গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্ঘটনার সময় বাসটি ৪৩ জন শ্রমিক বহন করছিল। তাঁরা এমএএস কার্গোতে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতেন।
সোহেল ছাড়া নিহত বাংলাদেশিরা হলেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরভাগল গ্রামের মো. আমির হোসেনের ছেলে আলামিন (২৫), কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে মহিন (৩৭) ও দাউদকান্দি উপজেলার ঢাকাগাঁও গ্রামের মো. ইউনুস মুন্সির ছেলে মো. রাজিব মুন্সি (২৭) এবং নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার নোয়াখোলা গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে গোলাম মোস্তফা (২৩)। নিহত ব্যক্তিদের লাশ বর্তমানে সেরডাং হাসপাতালে আছে।
এ ছাড়া সেরডাং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত বাংলাদেশিরা হলেন মোহাম্মদ নাজমুল হক (২১), মোহাম্মদ রজবুল ইসলাম (৪৩) ও ইমরান হোসাইন (২১) এবং পুত্রজায়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহিদ হাসান (২১), শামীম আলী (৩২), মোহাম্মদ ইউনুস (২৭) ও মোহাম্মদ রাকিব (২৪)।
হতাহতদের মধ্যে একজন মালয়েশিয়া, দুজন নেপাল ও দুজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকও রয়েছেন।