‘চাবি, জুতা ফেলেই জান বাঁচাতে দৌড় দেই’
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের আল নূর মসজিদে অস্ট্রেলীয় খ্রিস্টান শ্বেতাঙ্গ জঙ্গি ব্রেন্টন ট্যারান্ট আজ শুক্রবার জুমার নামাজের সময় যখন হামলা করে, তখন আফসানা আক্তার রিতু ছিলেন মসজিদের ভেতরেই।
আফসানার বাড়ি বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে। এক বছর আগে তাঁর বিয়ে হয় নিউজিল্যান্ডপ্রবাসী এক বাংলাদেশির সঙ্গে। নয় মাস আগে তিনি দেশ ছেড়ে নিউজিল্যান্ডে যান।
আল নূর মসজিদ থেকে তাঁদের বাসা মাত্র এক মিনিটের পথ।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আফসানা আক্তার রিতু সেই ভয়াবহ হামলার বিবরণ দিয়েছেন।
বাসার কাছেই যেহেতু মসজিদ, আফসানা তাই প্রতিদিন সেখানে নামাজ পড়তে যেতেন। ঘটনার সময় তাঁরা তিনজন বাংলাদেশি নারী একসঙ্গে ছিলেন।
‘আমরা মসজিদের ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ করে একটা শব্দ পাই। আমরা শব্দ শুনে দৌড়াদৌড়ি করে বাইরে আসি।
যারা গুলি করছিল, ওরা প্রথম মহিলাদের রুমে আসেনি, ওরা প্রথম গিয়েছিল পুরুষদের রুমে। আমরা তিনজন বাংলাদেশি এক সঙ্গে ছিলাম। তিনজনই একসঙ্গে দৌড় দেই।’
আফসানা বলেন, ‘আমাদের বাসা একদম মসজিদের পাশে। বাসায় আসতে এক মিনিট লাগে। গোলাগুলির শব্দ শুনে আমরা দৌড়ে বাসার দিকে আসি। কিন্তু বাসার চাবি, জুতা এইগুলা মসজিদে রেখে আসছি। জান বাঁচানোর জন্য পালিয়ে আসি।’
তাঁরা যে তিনজন একসঙ্গে ছিলেন, তাদের মধ্যে একজনের পায়ে গুলি লাগে। পরে অ্যাম্বুলেন্স এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আফসানা জানান, যে ব্যক্তি গুলি করছিল, তাকে দেখেননি তিনি। ‘আমরা ভয়ে পেছনে তাকাইনি।’
এই ঘটনার পর আফসানা এখন রীতিমত আতঙ্কে আছেন। অথচ নিউজিল্যান্ডে তাঁর গত নয় মাসের অভিজ্ঞতা ছিল একেবারই অন্যরকম।
‘বাংলাদেশে থাকতেই আমি জানতাম, নিউজিল্যান্ড বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। অনেক নিরাপদ। এ পর্যন্ত কোনোদিন কোনো সমস্যা হয়নি।’
কিন্তু শুক্রবারের এই ঘটনা আফসানাকে ভীষণ আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছে।