‘ড্রাগলর্ড’ গুজম্যান যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে দোষী সাব্যস্ত

Looks like you've blocked notifications!

মাদক পাচারের অভিযোগে মেক্সিকোর মাদক পাচারকারীর অন্যতম হোতা জোয়াকিন গুজম্যানকে (৬১) ১০টি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছে নিউইয়র্কের ফেডারেল কোর্ট।

এখনো গুজম্যানের রায় ঘোষণা করা হয়নি। তবে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

কোকেন ও হেরোইন পাচার, অবৈধ অস্ত্র দখল ও অর্থ পাচারের মতো আরো কয়েকটি মামলায় গুজম্যানকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

এর আগে মেক্সিকোর কারাগারে থাকা অবস্থায় কারাগারের একটি সুড়ঙ্গের মাধ্যমে পালিয়ে যান গুজম্যান। পাঁচ মাস পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে ২০১৭ সালে গুজম্যানকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করে মেক্সিকো সরকার। উত্তর মেক্সিকোতে অবস্থিত সিনাওলা ড্রাগ কার্টেলের পেছনের শক্তি ছিলেন এই মেক্সিকান।

আইনজীবীরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গুজম্যান।

বিচার চলাকালে ভয়াবহ সব তথ্য উঠে আসে এই মাদক পাচারকারীর বিরুদ্ধে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সিনাওলা কার্টেল হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। তার পরেই ফোর্বস ম্যাগাজিনে বিশ্বের সবচেয়ে ধনীদের তালিকায় উঠে আসেন গুজম্যান।

যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন রপ্তানি করা ও হেরোইন, মেথামফেটামাইন ও মারিজুয়ানা তৈরি  করা ও তা ছড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে অভিযুক্ত ছিলেন গুজম্যান।

কলম্বিয়ার মাদক পাচারকারী অ্যালেক্স সিফুয়েনটেস সাক্ষ্য দেওয়ার সময় বলেন, অল্প বয়সী মেয়েদের গুজম্যান তাঁর ‘ভিটামিন’ বলে উল্লেখ করতেন। তিনি বলতেন, যুবতী মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কই তাঁকে নতুন জীবন দিয়েছে।

সিফুয়েনটেস আরো বলেন, গুজম্যানকে সহায়তা করার জন্য মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট এনরিক পিনা নিয়েটোকে ১০০ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন গুজম্যান।

এ ছাড়া এক প্রতিপক্ষকে গুলি করে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেন গুজম্যান। আপন চাচাতো ভাইকে হত্যার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। অন্য একটি কার্টেলের প্রধান তাঁর সঙ্গে হাত মেলাননি বলে তাঁর ওপর আক্রমণ চালান গুজম্যান।

সিবিএস নিউজ জানায়, একটি কালো স্যুট আর টাই পরে আদালতে গিয়েছিলেন গুজম্যান। রায় ঘোষণার পর তাঁর চোখেমুখে কোনোরকম আবেগের চিহ্ন দেখা যায়নি।

আদালত কক্ষ থেকে যখন গুজম্যানকে বাইরে নেওয়া হচ্ছিল, তখন গুজম্যান তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে হাত মেলান এবং তাঁর স্ত্রী মেক্সিকোর সাবেক সুন্দরী এমা করোনেলকে হাত নাড়ান।

এই মামলার বিচারপতি ব্রায়ান কোগান এই বিচার পরিচালনায় জুরিদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। এই বিচারকাজটিকে অনেক কঠিন উল্লেখ করে বিচারপতি বলেন, ‘মনে রাখার মতো একটি বিষয় ছিল এই বিচারটি, একজন আমেরিকান হিসেবে আমি অনেক গর্বিত।’

তবে গুজম্যানের আইনজীবীরা বলছেন, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার চিন্তা করছেন।