ফিলিপাইনের দক্ষিণে একটি রোমান ক্যাথলিক গির্জায় পরপর দুটি বোমা হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৭৭ জন।

আজ রোববার মার্কিন বার্তা সংস্থা থমসন রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সকালে সুলু রাজ্যের জোলো দ্বীপের গির্জাটিতে প্রার্থনার সময় প্রথম বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। তার কিছু পরে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা যখন ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন, তখন দ্বিতীয় বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে গির্জার বাইরে পার্কিং এলাকায়।

সুলু রাজ্যে ইসলামিক উগ্রপন্থী সংগঠন আবু সায়াফের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এ ঘটনার দায় কেউ স্বীকার না করলেও এটি উগ্রপন্থী সংগঠনটির কাজ বলে ধারণা করছেন ফিলিপিন্স পুলিশের প্রধান অস্কার আলবায়ালদে।

পুলিশপ্রধান বলেন, ‘তারা এখানে শান্তি ব্যাহত করতে বল প্রদর্শন আর বিশৃঙ্খলার বীজ বপন করতে চায়।’

নিহতদের মধ্যে সামরিক ও বেসামরিক লোকজন রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বিভিন্ন যানবাহনে করে হতাহতদের কাছের জাম্বুয়ানগা শহরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, গির্জার সামনের রাস্তায় হতাহতরা পড়ে আছেন বলে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।    

দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডেলফিন লোরেনজানা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছি। দেশের প্রতিটি প্রান্তের লোকালয় ও জনমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছি। বিপর্যস্তকর প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

জলদস্যুতা, বোমা হামলা, অপহরণ আর শিরশ্ছেদের জন্য কুখ্যাত জঙ্গিগোষ্ঠী আবু সায়াফকে ফিলিপাইনে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেখা হয়। এটি জাতিসংঘের নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত দল।

ফিলিপাইনে খ্রিস্টানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু দক্ষিণের মিন্দানও এলাকাটি মুসলিমপ্রধান। সম্প্রতি সেখানে একটি গণভোট হয়েছে। এই গণভোটের ৮৫ ভাগ মানুষ মুসলিমদের স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়েছেন। কিন্তু যে কয়টি এলাকা এর বিপক্ষে, তার মধ্যে জোলো অন্যতম।

গণভোটের ভিত্তিতে ২০২২ সালে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের বিষয়টি কার্যকর করা হবে। তখন এই এলাকাটি পরিবর্তিত নাম হবে ‘বাংসামারো’। জোলোও এর অংশ হবে।

এ পরিস্থিতির মধ্যেই সেখানকার গির্জায় এই হামলার ঘটনা ঘটল।