ভারতে গো-হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, পুলিশ সদস্যসহ দুজন নিহত
ভারতের উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহর জেলায় গো-হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভের মুখে পুলিশসহ দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার জেলার স্যানা মহকুমাধীন মাহু গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গতকাল সকালে মাহু গ্রামের পাশে জঙ্গল লাগোয়া একটি মাঠ থেকে প্রায় ২৫টি গরুর মাংস উদ্ধার করা হয়। এ খবর রটে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। স্থানীয় গো-রক্ষা সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বেআইনিভাবে মাংস বিক্রি করতেই এত বিশাল সংখ্যক গরু হত্যা করা হয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় উত্তেজিত গো-রক্ষকসমাজ ট্রাক্টর ও ট্রলিতে উদ্ধার করা মাংস নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। প্রায় চারশ মানুষ ওই অবরোধে শামিল হন। স্থানীয় একটি মুসলিম সংগঠন মাংস খাওয়ার জন্য গো-হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করতে থাকেন তাঁরা।
এদিকে, খবর পেয়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করলে খণ্ডযুদ্ধের অবতারণা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে উত্তেজিত জনতা পাথর ছুড়ে মারতে শুরু করে।
জেলা শাসক অনুজ কুমার ঝা জানান, বিক্ষোভকারীদের প্রথমে অবরোধ তুলে নিতে বলে পুলিশ। কিন্তু অনুরোধ উপেক্ষা করে অবরোধকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে অনবরত ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করেন। উত্তেজিত জনতার মধ্য থেকে দুষ্কৃতকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
পরে গো-রক্ষকসমাজ চিংরাবটি পুলিশ ফাঁড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় একটি পুলিশভ্যানে। সে সময় বিক্ষোভকারীদের সরাতে পুলিশ শূন্যে গুলি চালায়। দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর জখম হন পুলিশ পরিদর্শক সুবোধ কুমার সিং ও স্থানীয় বাসিন্দা সুমিত। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫ কোম্পানি র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সসহ (র্যাফ) বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। রাজ্যের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইনশৃঙ্খলা) আনন্দ কুমার জানান, এলাকা উত্তপ্ত থাকলেও পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।
বুলন্দশহরে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছে। এ ঘটনায় যাতে উত্তেজনা আরো ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে কড়া নজর হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।