চীন এবার আনল কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার সংবাদ পাঠক
একবার ভাবুন, টানা ২৪ ঘণ্টা সংবাদ পাঠ করবে কিন্তু কোনো বাড়তি ওভারটাইমের পয়সা দাবি করবে না, এমন কর্মীই হয়তো খুঁজছেন সংবাদ চ্যানেলগুলোর মালিকেরা। প্রযুক্তির বাজারে হালনাগাদ ফ্যাশনের নাম ‘কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা’ বা ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’। এই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সংবাদ পাঠক এনেছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া।
সংবাদকর্মী সংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বের সবচাইতে বড় সংবাদ সংস্থাটি গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম চীনা ও ইংরেজি ভাষায় দুজন কৃত্তিম বুদ্ধির সংবাদপাঠককে দিয়ে খবর পড়িয়েছে।
চীনে চলমান ছয়দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা সম্পর্কে দেশটির প্রভাবশালী ব্যবসায়ী জ্যাক মা কি বলছেন- তা নিয়ে একটি খবর পরিবেশন করে সিনহুয়ার ইংরেজি টিভি সার্ভিস। ওই খবরটিতে সিনহুয়ার প্রকৃত সংবাদ উপস্থাপক জ্যাং জাওয়ের অবয়বে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার উপস্থাপক সংবাদ পড়েন।
একজন মানব উপস্থাপকের হুবহু মুখ, চোখ ও অঙ্গভঙ্গি নকল করে এটি দাঁড় করানো হয়েছে। নিজের উন্নয়ন কাজ চলছে জানিয়ে খবর পড়া শেষে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার ওই সংবাদপাঠক সবাইকে ধন্যবাদও দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিক অবস্থায় একে একঘেয়ে মনে হচ্ছে। আস্তে আস্তে উচ্চারণে আরো স্পষ্ট মুখভঙ্গি, নানারকম চেহারা ও ভিন্ন ভিন্ন মানুষের অবয়বে আনা হলে এটি জনপ্রিয় হতে পারে বলে মত দিয়েছেন তাঁরা।
সারা দুনিয়ার লক্ষ লক্ষ সংবাদপাঠকের চাকরি হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে এই আবিষ্কারে সংবাদকর্মীরা উদ্বেগ জানাবেন হয়তো। কিন্তু চীনা প্রযুক্তিপণ্যে খরচ বাঁচানোর বিষয়টি যেহেতু সব সময় গুরুত্ব পেয়ে থাকে, এক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি জনপ্রিয় হলে সংবাদ চ্যানেলগুলোর ব্যয় কিছুটা হয়তো কমবে।
চীনের বৃহত্তম প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সোগু এবং সিনহুয়া যৌথভাবে এমন সংবাদপাঠককে হাজির করেছে। প্রথমে একটি ইন্টারনেট কনফারেন্সে এটি প্রদর্শন করা হয়, পরে তা সম্প্রচারও করে সিনহুয়া।
প্রযুক্তিগত আবিষ্কারের দৌড়ে চীন প্রতিদিনই নিয়ে আসছে নিত্য নতুন বিস্ময়কর সব পণ্য। এই কৃত্তিম সংবাদপাঠক তারই ধারাবাহিকতা ছাড়া কিছু নয়। বলা হচ্ছে, মানুষের অবয়বে এই প্রথম কোনো বাস্তবকাজে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার দেখা গেল।