বিশ্বের প্রতি প্যারিস চুক্তি মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরসনে প্যারিস চুক্তি মেনে চলতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত প্যারিস চুক্তি সিওপি-২৪ বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত সদস্যদের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চলতি বছরের ডিসেম্বরে পোল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় সিওপি-২৪-এর আগে এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা প্রয়োজন এবং কৃষি, জনস্বাস্থ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো ক্ষেত্রে প্রযুক্তি উন্নয়ন ও হস্তান্তর প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। আমাদের দেশে প্রায় ১৬ কোটি লোক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।’
শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের নেওয়া স্বল্প কার্বন কর্মসূচির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ এরই মধ্যে প্রায় ৬০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করেছে। দরিদ্র লোকদের মধ্যে ২০ লাখ উন্নত মানের রান্নাবান্নার স্টোভ বিতরণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তাঁর সরকার জলবায়ুজনিত সমস্যা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি কমিয়ে আনতে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় জিডিপির ১ শতাংশ এ খাতে বরাদ্দ দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ফলে অভিযোজন ও প্রশমনে কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে কৃষি সময়োপযোগী করতে নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৪৫ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় জলবায়ুজনিত পরিস্থিতি সহিষ্ণু বিভিন্ন ধরনের শস্য উদ্ভাবন করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের একটি নদীবিধৌত এলাকায়। তিনি নদী এলাকায় থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জীবনের উত্থান-পতন প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত সাহসী। তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে বেঁচে আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন। তিনি বলেন, ‘আমরা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে দেশবাসীর নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে চাই।’
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি দায়িত্বশীল সদস্য দেশ হিসেবে শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে কখনই উন্নয়নশীল দেশের পেছনে থাকবে না। তিনি বলেন, ‘আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা, জলবায়ু পরিস্থিতির উন্নতি করা এবং উন্নতমানের শিল্পায়ন গড়ে তোলা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জাতীয় বাজেটে এসব খাতে বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।’