ভারতে নারীর আত্মহত্যা সবচেয়ে বেশি

Looks like you've blocked notifications!

ভারতে নারীর আত্মহত্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। নতুন গবেষণা বলছে, ২০১৬ সালে বিশ্বে যেসব নারী আত্মহত্যা করেছেন, তার ৩৭ শতাংশই সংঘটিত হয়েছে ভারতে। আর এ ক্ষেত্রে পুরুষ আত্মহত্যাকারীর হার ২৪ শতাংশ।

দ্য গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিস ১৯৯০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বে সংঘটিত আত্মহত্যা নিয়ে গবেষণা করে। গত বুধবার গবেষণা নিবন্ধটি ল্যানচেট পাবলিক হেলথ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। নিবন্ধে বলা হয়েছে, মোট আত্মহত্যাকারীর ৬৩ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ৩৯ বছর বয়সের মধ্যে।

ভারতে মৃত্যুর কারণের মধ্যে আত্মহত্যা এক নম্বরে আর সারা বিশ্বে মৃত্যুর কারণের মধ্যে আত্মহত্যা রয়েছে তিন নম্বরে।

১৯৯০ থেকে ২০১৬ সালে ভারতে আত্মহত্যায় মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৬ সালে ভারতে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার ৩১৪ জন আত্মহত্যায় মৃত্যুবরণ করেন। গবেষণা নিবন্ধের প্রধান লেখক, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার অধ্যাপক রাখি ড্যানডোনা বলেছেন, ভারতে আত্মহত্যায় মৃত্যুর উচ্চহার জনস্বাস্থ্যের চরম সংকট।

ভারতের কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় নারী-পুরুষ উভয়ের আত্মহত্যায় মৃত্যুর উচ্চহার রয়েছে। আর কেরালা ও ছত্তিশগড়ে পুরুষ আত্মহত্যাকারীর সংখ্যা বেশি।

ভারতে প্রতি এক লাখে ১৫ জন নারী আত্মহত্যা করেন, ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে নারী-আত্মহত্যার হারের চেয়ে যা দ্বিগুণ। ওই বছরে বিশ্বে এক লাখ নারীর মধ্যে সাতজন আত্মহত্যা করেছেন।

ভারতে বিবাহিত নারীর আত্মহত্যার সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছে নিবন্ধটি। গবেষণামতে, বিবাহ আত্মহত্যা থেকে নারীকে সুরক্ষা দিতে পারছে না। পারিবারিক বিবাহ ও বাল্যবিবাহ, অল্প বয়সে মাতৃত্ব, সামাজিক সংকট, গৃহনির্যাতন ও অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতাই এর জন্য দায়ী।

একই সময়ে আত্মহত্যায় পুরুষের মৃত্যুর উচ্চহার তেমন বদলায়নি এবং এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলেও জানিয়েছেন ড্যানডোনা। ভারতে তরুণ বয়সে আত্মহত্যার হার বেশি।

ড্যানডোনা আরো বলেন, ব্যক্তিগত ও সামাজিক সমস্যা, আর্থিক সমস্যা, ভগ্নস্বাস্থ্যই ভারতে আত্মহত্যার প্রধান কারণ। আর বিষপান, অতিমাত্রায় ওষুধ সেবন ও ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা বেশি।

আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, অবসাদ, শারীরিক অক্ষমতা ও নিজেকে পরিবারের বোঝা ভাবাই এর কারণ বলে জানিয়েছেন ড্যানডোনা।

আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি দ্রুত নজর দিতে হবে বলে মনে করেন ড্যানডোনা। তিনি বলেন, দ্রুতই জাতীয় কর্মসূচি ঘোষণা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সূত্র : ডিএনএ।