অটল বিহারি বাজপেয়ি আর নেই

Looks like you've blocked notifications!

ভারতের দশম প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি আর নেই। ভারতের দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

গত ১১ জুন কিডনি, হৃদযন্ত্র এবং মূত্রনালিতে সংক্রমণ নিয়ে দিল্লির এইমসে ভর্তি হন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এই নেতা। গত ২৪ ঘণ্টায় তাঁর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়। তাঁর একাধিক অঙ্গ, প্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করে গতকাল বুধবার থেকেই। এরপর তাঁকে ‘লাইফ সাপোর্টে’ রাখা হয়। চিকিৎসকরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও বাজপেয়ির বয়সজনিত কারণে তা আর সম্ভব হয়নি।

বাজপেয়ির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই দলমত নির্বিশেষে শোকপ্রকাশ করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা। কট্টর বিজেপি বিরোধীদের কাছেও অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির শিষ্য তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী অটল বিহারি বাজপেয়ি।

১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে তিনবার নির্বাচিত হয়েছিলেন বাজপেয়ি। এরপর ১৯৯৯–২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রথম অকংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী হিসেব পাঁচ বছর পূর্ণ করেন তিনি। তাঁর অবস্থা সংকটজনক শুনেই গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এইমসে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ বৃহস্পতিবারও হাসপাতালে যান তিনি। এদিন  হাসপাতালে যান উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী,  দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিসোদিয়াও তাঁকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। 
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও দুপুরের বিমানে দিল্লি যান বাজপেয়িকে দেখতে। রওনা হওয়ার আগে দমদম বিমানবন্দরে মমতা জানান, বৃহস্পতিবারের সব কাজ বাতিল করে শুধু অটলবিহারি বাজপেয়িকে দেখতেই তিনি দিল্লি যাচ্ছেন।

১৯২৪ সালে ২৫ ডিসেম্বর মধ্য প্রদেশের গোয়ালিয়রে জন্ম বাজপেয়ির। পরে আরএসএস-এ  তিনি যোগ দেন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় ব্রিটিশ আমলে তাঁকে কারাবাসেও যেতে হয়েছিল। প্রায় চার দশকের এই সাংসদ ছিলেন ভারতের প্রথম অকংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী যিনি পুরো পাঁচ বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। এরপর ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে ফের প্রধানমন্ত্রী হন। প্রথম দফায় ১৩ দিন, দ্বিতীয় দফায় ১৩ মাস ও পরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুরো মেয়াদ সম্পূর্ণ করেন। ২০১৪ সালে তাঁকে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়।